6 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

মিডিয়া ট্রায়াল

মিডিয়া ট্রায়াল - the Bengali Times
ছবিইউল্যাশ

ইদানীং “মিডিয়া ট্রায়াল” বলে একটি কথা খুব শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি আসলে কি?

খুব সহজ কথায়, কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং আদালতে বিচারিক রায় ঘোষণার আগেই সামাজিক মাধ্যমে জনসাধারণ তার বিরুদ্ধে একধরনের রায় দিয়ে ফেলেন। জনসাধারণের দেওয়া সেই রায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেও যেতে পারে, আবার পক্ষেও যেতে পারে।

- Advertisement -

সাধারণতঃ সোস্যাল মিডিয়াতে প্রকাশিত জনসাধারনের মতামত,তাদের লেখা বিভিন্ন স্ট্যাটাস এর মধ্যে পড়ে।

এই ধরনের মিডিয়া ট্রায়ালের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে অভিযুক্ত যে কেউ আদালতে বিচারের রায় ঘোষিত হবার আগেই জনতার আদালতে বহুভাবে এবং বিচিত্রভাবে রায়ের সম্মুখীন হন। এতে করে পারিবারিকভাবে এবং সামাজিকভাবে মর্যাদা ক্ষুন্ন হবার পাশাপাশি ভুক্তভোগীর মনে গভীর রেখাপাত করে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জনসাধারণের দেওয়া এই রায় নেতিবাচকই হয়ে থাকে।

প্রকৃত ট্রায়ালের আগেই এই ধরনের ট্রায়াল নৈতিক বিচারে একদমই উচিত নয়। কারন আপনি কোন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে রায়ের আগে যে রায়টি দিবেন তা অন্যদেরকেও প্রভাবিত করতে পারে।

এই জন্য বিচারাধীন কোন বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। কোন সাবজুডিস বিষয়ে রায় প্রদানের মত মন্তব্য করা যায় না কিংবা কোন লেখাও দেওয়া যায় না । সেটি অনেকটাই আদালত অবমাননার সামিল। কারন, আদালত যে কাজটি করার কথা আপনি তা এক্তিয়ার বর্হিঃভূতভাবে নিজেই করে ফেলছেন।

নৈতিক বিচারে এই ধরনের মিডিয়া ট্রায়াল গ্রহনযোগ্য নয় কেন?

এর উত্তর হচ্ছে,

ধরুন, আপনি সোস্যাল মিডিয়াতে গ্রেফতারকৃত একজন অভিযুক্তকে আপনার লেখার মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে একটি স্ট্যাটাস দিলেন। পরে, বিচারিক আদালতে রায় হলো ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ। এক্ষেত্রে আপনার ওই স্ট্যাটাস আদালত অবমাননার সামিল একটি গর্হিত কাজ করেছে। কারন, বিচারক যে কাজটি করার কথা আপনি নিজেই সেই কাজটি করে ফেলছেন।

এর বিপরীত বিষয়ও হতে পারে। ধরুন,আপনি কোন গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তকে সোস্যাল মিডিয়াতে আপনার একটি লেখার মাধ্যমে নির্দোষ বলে স্ট্যাটাস দিলেন। পরে বিচারিক আদালতে রায় হলো ওই ব্যক্তি দোষী। এক্ষেত্রেও আপনার লেখা আদালত অবমাননার সামিল একটি অন্যায় এবং অনৈতিক কাজ করে ফেলেছে।

এটি অনেকটাই আইন নিজের হাতে নিয়ে ফেলার মত ব্যাপার। আইন নিজের হাতে নিলে যেমন অন্যায় এবং বেআইনি তেমনি অভিযুক্ত কারো বিরুদ্ধে বা পক্ষে সোস্যাল মিডিয়াতে মন্তব্য করে লেখাও অন্যায় এবং বেআইনি।

তবে এই মিডিয়া ট্রায়াল রোধ করা সম্ভব নয়। কারন, এর বিরুদ্ধে খুব একটা কেউ অভিযোগ নিয়ে আদালতে যায়নি। দুই একটা হয়ত পাওয়া যাবে খুজলে।

এটাতে যে impact টি হয়, তা হচ্ছে, এই মিডিয়া ট্রায়ালের কারনে একজন আদালত কর্তৃক শাস্তি পাবার আগেই বহুবার শাস্তি পেয়ে যান, কোন নির্দোষ বহুবার নির্দোষ প্রমানেই আগেই বহুবার দোষী সাব্যস্ত হন।

এখন, বলুন, আপনার বিচারে এই মিডিয়া ট্রায়াল উচিত কি উচিত নয়?

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles