
মন নেচে ওঠে যখন শুনি বাংলা একাডেমি বইমেলা পাল তুলে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। এখন গোটা পৃথিবী তছনছ অবস্থা অথচ বাংলাদেশ অনেকটা ঠিকঠাক আছে। ভেবেছিলাম ফুটবল হয়, ক্রিকেট হয়, শুধু বইমেলা হবেনা, এতো মানতে খুব কষ্ট হবে! যাক, শেষ পর্যন্ত শুরু হচ্ছে মার্চের ১৮প্রাণের মেলাা বইমেলা। গত বেশ ক’বছর আমার প্রিয়জন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝরের পাল্লায় পড়ে বইমেলা যেন
হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে। স্পেস মেনেজমেন্ট এত ভালো যে চাইলেও মানুষে মানুষে গাদাগাদি আর সম্ভবব নয়। নির্ঝরের হাতে সব কিছুই কেমন বদলে যায়। আসলে আমার দেখা প্রতিভাবান অনুজপ্রতিমের মধ্যে নির্ঝর তুলনাহীন। নব্বই দশকে ঢাকার টাইকুনরা যখন কমার্শিয়াল চিত্রশালা করার কথা ভাবেননি তখন নির্ঝর ‘যোজন’ নামের গ্যালারী খুলেছিলো। স্টিল ক্যামেরা হাতে নিয়ে ফটোগ্রাফীর প্রদর্শনীর পর প্রদর্শনী করেছে, আধুনিক ফটোগ্রাফীর জনক আনোয়ার হোসেন ও দেখে মুগ্ধ। ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হয়ে গোটা এশিয়া মাতিয়েছে। সিনেমা বানাতে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে নিজেদের চেনাজানা চরিত্রের সঙ্গে নিজস্ব ঐতিহ্য মিলিয়ে কিভাবে ভালো সিনেমা হয়। তার ‘আহা’ আমার প্রিয় সিনেমার তালিকায় একটি। গান লেখার ঝোক চালোতো এমন হলো দুই বাংলার কোন এমন কন্ঠশিল্পী আছে যে নির্ঝরের লেখা কন্ঠে তুলে নেয়নি। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বিশাল স্পেসে ফ্যাশান শো স্টাইলে দীর্ঘ রেম্পে ‘নির্ঝর ১০১’ দেখতে গিয়ে হতবাক হয়েছিলাম।গানের অনুষ্ঠানের এমন উপস্থাপন নির্ঝরের মাথা ছাড়া কার মগজ থেকে বেরুবে!
এবারের বইমেলায় এক নতুন মাত্রা দিতে পাঁচটি ৩০ ফুট উঁচু বাঁশে স্টেক্চারের স্তম্ভ দাঁড়াবে। থিম হচ্ছে স্বপ্ন,চেষ্টা,চিন্ত,অর্জন এবং। এই দায়িত্ব নিয়েছেন আরেক নামী শিল্পী তাসাদ্দুক হোসেন দুলু।
বইমেলা টানের আরেকটি কারণ আমার প্রকাশক রয়েল পাবলিশার্সের প্রিয় জামাল আহমেদ নিজেই নানা পত্রিকায় ছাপা কিশোর গল্প নিয়ে ২টি বই প্রকাশ করেছেন ‘বুবু আমি রাসেল’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর স্পর্শ’।