8.7 C
Toronto
শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫

নবীগঞ্জে বিধবা, বয়স্ক মাসিক ভাতার টাকা গায়েব!

নবীগঞ্জে বিধবা, বয়স্ক মাসিক ভাতার টাকা গায়েব! - the Bengali Times

নবীগঞ্জে বিধবা, বয়স্ক মাসিক ভাতার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া বিকাশ অ্যাকাউন্টে গায়েব হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বৃদ্ধা কমলা বিবি। প্রায় ১০ ভাতা ভোগি তাদের ভাতার টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সমাজসেবা কার্যালয়ের স্থানীয় কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিকাশ এজেন্ট একে অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলছেন।

- Advertisement -

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা ও সমাজসেবা অফিস তাকে ভিক্ষা বৃত্তি করার পরার্মশ দিয়েছে। এনিয়ে বিপাকে পড়ে ঐ মহিলা সমাজ পতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভেড়াচ্ছেন। এরকম আরো অনেকের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছেন।

বিঞ্চিত এসব ভাতাভোগীরা বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা না পেয়ে প্রতিনিয়তই ঘুরছেন সমাজসেবা অফিসে। ৯ মাসের মাসের ভাতার টাকা পাননি ঐ বৃদ্ধা মহিলাসহ ১০ জন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব উল্লাহর স্ত্রী বৃদ্ধা কমলা বিবি বলেন, ব্যাংকে নিয়মিত বয়স্ক ভাতার টাকা পেতাম। মোবাইলে বিকাশ খোলার পর থেকে আর টাকা পাই না। এই টাকায় আমার একমাত্র ভরসা।

তিনি বলেন তার বয়স্ক ভাতার টাকা অন্যের মোবাইলে চলে যায়। তাকে সমাজ সেবা অফিসের লোকজন বলছে আপনি ভিক্ষা করলে এর চেয়ে বেশি টাকা পাবেন। তিনি ভিক্ষা ভিত্তি করতে চান না। তার ছেলে সন্তান নেই অন্যের সাহায্যে চলেন। তিনি এই টাকা পেলে অনেক উপকার হবে এবং জীবন চলার পথে সাহায্য হবে।

দক্ষিন দৌলতপুর গ্রামের মিনা বেগম বলেন আমার স্বামী মরার পর আমার স্বামীর ভাতার কাড আগের মেম্বার নিয়ে গেছেন, দুই বছর হয়ে গেছে আমি এখনও কোন টাকা পাইনি। আমি এখনও অপেক্ষা করছি কখন টাকা পাবো। জানিনা মেম্বার সাব কার নাম্বার দিয়েছেন।

আউশকান্দি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার সিজিল ইসলাম সেজলু বলেন, আমার আগের মেম্বার সেটিং করেছেন আমি কিছুই জানিনা। তবে মহিলা আমার কাছে আসার পর আমি বিষয়টি সমাজ সেবা অফিসকে জানিয়েছি তারা বলছেন ব্যবস্থা নিবেন। এখানে কারচুপি হয়ে থাকলে সেটাও দেখবেন। আরও ঘটনা এরকম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিকাশ এজেন্ট বলেন, সমাজসেবা কার্যালয় তাদের যে নম্বর দিয়েছে তারা সেই বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছি মাত্র। সম্পূর্ণ নম্বর ভুল অথবা ডিজিট ভুলের দায় স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের লোকজনের। এখানে তাদের কোন ভুল নেই।

আউশকান্দি সোনালী ব্যাংকের ম্যানাজার অমর দাশ তালুকদার বলেন, আমাদের কাছে থাকা অবস্থায় ঐমহিলা টাকা পেয়েছেন। এখন টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়েলে যায় এদায়িত্ব আমাদের নয়। বিকাশের তালিকা সমাজসেবা অফিস স্থানীয় মেম্বারদের সম্বনয়ে করেছে এখন কেন টাকা পায়নি তারা ভালো বলতে পারবেন।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা মহিলা ভাতা প্রকল্পের ইউনিয়ন সমাজকর্মী চিত্ত ভূষন মজুমদার বলেন,আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যদি কোন প্রতারক ভুয়া মোবাইল নাম্বার দিয়ে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। কিভাবে মোবাইল নাম্বার ভুল হলো সে বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে কথা বলবো।

প্রতারকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন আগের মেম্বার সাবের সাথে কথা বলেই আমরা প্রত্যকটি ভাতার নাম্বার দিয়েছি। এখন ভুল হলো কি করে জানিনা। তিনি বলেন, মহিলাকে ভিক্ষা করার পরামর্শ দেননি।

আঊমকান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দিলাওয়ার হোসেন বলেন, আমার আগের চেয়ারম্যানের আমলে এমন হয়েছে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি ভাতা ভোগিদের পরিবর্তে কার নাম্বার দেয়া হলো । এমন দূর্নীতি হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে বলবো।

নবীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এমন অভিযোগ পেয়েছি। ভাতা ভোগিদের নাম্বার না দিয়ে অন্য লোকের নাম্বার দিয়ে একটি প্রতারক চক্র টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। আগের চেয়ারম্যান মেম্বারএমন করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন চেয়াপরম্যান ও মেম্বার আসায় বিষয়টি প্রকাশ হয়েছে।

নবীগঞ্জ নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বলেন, অসহায় ভাতাভোগী যে ক্ষতির শিকার হলে সংশ্লিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঐ মহিলার ভাতার টাকা কোথায় যাচ্ছে সেটা তদন্ত করে দেখা হবে । সে একবার পেয়ে থাকলে সে বিকাশে টাকা না পাওয়া কথা নয়। এখানে কোন প্রতারণা হয়ে থাকে তার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles