
কানাডা সরকারের বেঁধে দেয়া বিধিনিষেধ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সত্ত্বেও নতুন এই ধরনটি দেশটির সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বর্তমানে দেশটিতে জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন বিধিনিষেধ বলবৎ রয়েছে। ইতোমধ্যে গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। রোনার নতুন ধরন দাপট দেখিয়েই যাচ্ছে উত্তর আমেরিকার এ দেশটিতে। করোনার নতুন ধরনে রোজ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যা বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে। বরফাচ্ছন্ন কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশে প্রতি বছরই বছরের এই সময়টায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। কিন্তু গত একবছরে তা বন্ধ। কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বের সঙ্গে কানাডাকেও যেন থমকে দিয়েছে।
এদিকে, মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় ‘গুড ফ্রাইডে’ও কঠোর জনস্বাস্থ্য বিধিবিধান মেনে পালন করল কানাডার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের শিকার তিনটি প্রদেশ। সংক্রমিতের সংখ্যা কমিয়ে আনতেই এ পদক্ষেপ। প্রাদেশিক রাজধানীসহ কুইবেকের তিনটি অঞ্চলে বর্তমানে ১০ দিনের লকডাউন চলছে। জানুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছানোর ঠিক ঘণ্টাখানেক আগে এ লকডাউন বলবৎ করা হয়। ব্রিটিশ কলাম্বিয়াও লকডাউন আরোপ করেছে, যেটাকে তারা বলছে তিন সপ্তাহের ‘সার্কিট ব্রেকার’। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতেই এ উদ্যোগ।
প্রদেশজুড়ে একই পদক্ষেপে আছে অন্টারিও। তারা এটার নাম দিয়েছে ‘ইমার্জেন্সি ব্রেক’। এর ফলে পারসোনাল কেয়ার সার্ভিস গ্রহণ ও রেস্তোরাঁয় বসে ডাইনিংয়ের সুযোগ থাকছে না। আবশ্যক ও অনাবশ্যক যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে সেখানেও ধারণক্ষমতার একটা অংশ কাজে লাগানো যাবে। হস্তক্ষেপ না করলে এ মাসের শেষ নাগাদ দৈনিক সংক্রমণ ৬ হাজারে পৌঁছাতে পারে, এমন প্রক্ষেপন পাওয়ার পর এ পদক্ষেপে গেল অন্টারিও।
তিনটি প্রদেশের সমস্যাই একই ধরনের হলেও বিধিবিধানের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলোর মধ্যে পার্থক্য আছে। কুইবেকের বেশি সংক্রমিত এলাকার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও অন্টারিও এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সে পথে যায়নি। তিনটি প্রদেশে ব্যক্তিগত স্থাপনার অন্দরে জমায়েত নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে কুইবেক বাড়ি ও কটেজে আউটডোর জমায়েতও বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ির বাইরে সর্বোচ্চ ১০ জনের জমায়েতকে নিরাপদ বলে মত দিয়েছে অন্টারিও এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়া উভয়েই।
কুইবেকের অধিকাংশ অঞ্চলে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে জনগণের বাড়ির বাইরে বেরোনো বারণ। যদিও প্রদেশটির লকডাউনের আওতায় আসা নতুন তিনটি অঞ্চলে কারফিউ শুরুর সময় রাত ৮টায় এগিয়ে আনা হয়েছে। স্কুল বন্ধের পাশাপাশি অনাবশ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১০ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে কুইবেক সিটি, লেভিস ও গ্যাটিনোতে। অন্যান্য স্থানে যেসব উপাসনালয় দুই মিটারের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারবে সেখানে সর্বোচ্চ ২৫০ জনের জমায়েতের অনুমতি দিয়েছে কুইবেক।