
ভারতের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি। মাত্র ৬৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পুরো নাম অলোকেশ লাহিড়ি হলেও বাপ্পি লাহিড়ি নামেই সর্বাধিক পরিচিত তিনি। শৈশব থেকেই সংগীতের প্রতি প্রবল ভালোবাসা ছিল বাপ্পি লাহিড়ির। বাপ্পি লাহিড়ির আসল নাম যদিও অলোকেশ লাহিড়ি। তবে মাত্র চার বছর বয়সে লতা মঙ্গেশকারের একটি গানের সঙ্গে তবলা বাজিয়ে সবার নজর কেড়েছিলেন অলোকেশ। আর তখন থেকেই মুম্বাই ফিল্ম জগতের সবাই তাকে ডাকত বাপ্পি বলেই। বলিউডের মেলোডি সংগীত অঙ্গনে রক গানকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন যারা তাদের মধ্যে অন্যতম নাম হলো বাপ্পি লাহিড়ি।
বাবা অপরেশ লাহিড়ি ছিলেন বাংলা সংগীতের জনপ্রিয় গায়ক এবং মা বাঁসরি লাহিড়ি ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পী। ১৯৭২ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ‘দাদু’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বলিউডে সংগীতশিল্পী হিসেবে অভিষেক হয় বাপ্পি লাহিড়ির। পরের বছর ‘নানহা শিকারি’র মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন সংগীতপরিচালক হিসেবে। ১৯৭৫ সালে ‘জখমী’ সিনেমায় সঙ্গীতপরিচালক ও শিল্পীর দ্বৈত ভূমিকায় নিজেকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি। সংগীতে অবদানের জন্য পেয়েছেন নানা সম্মাননাও।
হিন্দি ও বাংলা ছাড়াও তেলেগু, কান্নাডা ভাষার সিনেমা সংগীত-পরিচালনা করেছেন বাপ্পি লাহিড়ি। গানের পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন সিনেমাতে। অসংখ্য বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়া বাপ্পি লাহিড়ি একাধারে ছিলেন গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গায়ক। সংগীতাঙ্গনে তিনি বাপ্পি-দা নামেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।
বাপ্পি রচিত সংগীতগুলো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম, একবার কহো (১৯৮০); সুরক্ষা; ওয়ারদাত; আরমান; চলতে চলতে; কমাণ্ডো; ইলজাম; পিয়ারা দুশমন; ডিস্কো ড্যান্সার; ড্যান্স ড্যান্স; ফিল্ম হি ফিল্ম; সাহেব; টারজান; কসম পয়দা করনে ওয়ালে কি; ওয়ান্টেড: ডেড অর এলাইভ; গুরু; জ্যোতি; নমক হালাল; শরাবী (১৯৮৫: ফিল্মফেয়ার সেরা সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার); এইতবার; জিন্দাগী এক জুয়া; হিম্মতওয়ালা; জাস্টিস চৌধুরী; নিপ্পু রাব্বা; রোদী ইন্সপেক্টর; সিমহাসনম; গ্যাং লিডার; রৌদী অল্লাদু; ব্রহ্মা; হাম তুমহারে হ্যায় সনম এবং জখমী।
এ ছাড়াও তিনি মালায়ালম চলচ্চিত্র (কেরালা) দ্য গুড বয়েজ ছবির সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।