
গত মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি গায়ক ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী। বলিউডের গোল্ডেন ম্যান বলে খ্যাত এই শিল্পাীর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। জীবদ্দশায় তিনি সোনার গহনা পরতে ভীষণ ভালোবাসতেন। কিন্তু এখন তার কী হবে? এমন প্রশ্নই এখন তার কোটি কোটি ভক্ত ও অনুরাগীদের মাঝে উঁকি দিচ্ছে।
সোনার গহনা ছিল বাপ্পি লাহিড়ী সবচেয়ে পছন্দের। কারণ তিনি মনে করতেন সোনা সৌভাগ্যের প্রতীক। তাই নিজেকে সোনায় মুড়ে রাখা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলে বাপ্পিদার। তার অঙ্গজুড়ে সারাক্ষণ শোভা পেত নানা ধরনের অলঙ্কার। গলায় রত্ন খচিত নানা ধরনের পেনডেন্ট, হার। ১০ আঙুলে ১০ রকমের আংটি।
শোনা যায়, একটি করে অ্যালবাম মুক্তি পেলেই একটি করে সোনা বা হীরের গয়না কিনতেন বাপ্পি। সংস্কার ছিল, তা হলেই তার গান সোনার মতোই চমকাবে সবার হৃদয়ে। তিনিই এতোই সোনাপ্রেমী ছিলেন যে শেষ জন্মদিনে নিজেই নিজেকে উপহার দিয়েছিলেন সোনার পেয়ালা!
তার এই সব ব্যাক্তিগত প্রতিটি গয়নার জন্য আলাদা করে বাক্সও ছিল। যেখানে দিনের শেষে পরিচ্ছন্ন করে রেখে দেওয়া হতো যাবতীয় গয়না। প্রতিটি অলঙ্কার যাতে যত্নে থাকে তার জন্য আলাদা করে দেখভালের লোকও নিযুক্ত করেছিলেন। বাপ্পিদার সেই সহকারী নিয়মিত গয়নাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করতেন।
তার গহনা কেউ স্পর্শ করুক এমনটা তিনি মোটেও পছন্দ করতেন না। এক বার তার এক সহকারী তার গহনার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিনয়ের সঙ্গে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সুরকার। অনেকেই নতুন গয়না ছুঁয়ে দেখতে পছন্দ করেন। বাপ্পিদার তাতেও আপত্তি ছিল। কেউ যাতে তার শরীর এবং গয়না স্পর্শ করতে না পারে, তার জন্য সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন। কিন্তু তার অবর্তমানে এসব গহনার কী হবে তাকি ভেবেছিলেন তিনি?
বাপ্পিদার এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, শিল্পীর দুই সন্তান বাপ্পা আর রেমা ঠিক করেছেন বাবার বাকি জিনিসের মতোই গয়নাগুলোও তারা সংরক্ষণ করবেন। দু’টি ভাগে রাখা হবে সবকিছু। একটি ভাগে থাকবে তার রোজের পরার গয়না। যত্ন করে সাজানো থাকবে বাক্সে। অন্য ভাগে থাকবে তুলে রাখা গয়না। সেগুলোর বাক্স আলাদা।
জীবিত অবস্থায় বাপ্পি লাহিড়ী সোনাপ্রীতির জন্য অনেকের কাছ থেকেই উপহার পেয়েছেন সোনার গহনা, মূর্তি ও টোকেন। সেগুলোও সংরক্ষিত রাখা হবে সযতনে এমনটাই বলছে তার পরিবার ও পরিজনরা।