
চাকরির প্রলোভনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে নারীকণ্ঠ ব্যবহার করে অনলাইনে নারীদের গোপন ভিডিও ধারণ করত আল ফাহাদ (১৯) নামের এক তরুণ। এরপর চাকরি দেওয়ার পরিবর্তে উলটো চাকরিপ্রত্যাশীদের জিম্মি করে আদায় করত অর্থ। টাকা না দিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাত।
গত দেড় বছরে এভাবে শতাধিক নারীকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা হয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এক তরুণকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অনলাইনে প্রতারণার শিকার কয়েক নারী সম্প্রতি র্যাবের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে র্যাব তদন্ত শুরু করে। বুধবার রাতে র্যাব রাজধানীর গুলশান থানার নর্দ্দা এলাকা থেকে ফাহাদকে আটক করে। তার কাছ থেকে একটি ক্যামেরা, দুটি ক্যামেরার লেন্স, একটি মোবাইল ফোন, ছয়টি সিমকার্ড, একটি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড এবং ৪০৩টি ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন সাইটে দেশি-বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের আকৃষ্ট করত ফাহাদ। আগ্রহী নারীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিবন্ধন ফি নিত। করোনাকালে ভিডিও কলে চাকরির জন্য নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (মেডিকেল পরীক্ষা) নেওয়ার নামে কৌশলে তাদের গোপন ভিডিও ধারণ করত। পরে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করত।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ফাহাদ জানায়, তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকায়। সে তার বাবার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের পাশে ছোট একটি দোকানে ফল বিক্রি করত।
ফাহাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশকিছু ভুয়া আইডি ব্যবহার করত। অ্যাপের মাধ্যমে নিজের কণ্ঠ পরিবর্তন করে নিজেই চিকিৎসক সেজে ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর নামে নারীদের গোপন ভিডিও ধারণ করত। বিভিন্ন কৌশলে প্রার্থীদের করোনাকালীন ভার্চুয়াল মেডিকেল করা হবে বলে জানানো হতো। পরীক্ষার সময় নিজের মোবাইলের ক্যামেরা বন্ধ রাখত। এভাবে সে শতাধিক নারীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে।