
ক’দিন আগে এই চিঠিটা ডাকযোগে এসেছে। এটা আসলে চিঠি নয় জরিমানার টিকিট। আমার টরন্টোর বাসার পাশের রাস্তায় স্পিড লিমিট অতিক্রম করে গাড়ী চালানোর দায়ে এই জরিমানা করা হয়েছে। চল্লিশ কিলোমিটারের উপরে চালানো যাবে না ওই রাস্তায়। কোন পুলিশ বা ট্রাফিকের সাথে দেখাও হয় নি। রাস্তায় লাগানো গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
বাসায় মেইল করে টিকিট চলে এসেছে। সেই সময় কে গাড়ীটি ড্রাইভ করছিল জানি না। আমি অথবা আমার ছেলে মেয়ে অথবা আমার স্ত্রী যে কেউ হতে পারে। সেটা কোন মুখ্য বিষয় নয়। বিষয় হলো নাম্বার প্লেট ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। নাম্বার প্লেট সরকারের খাতায় একটি ঠিকানা দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা আছে। ঠিকানামত জরিমানার টিকিট পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমি এই জরিমানা পরিশোধ করতে বাধ্য।
এটাই আমার শাস্তি। কথা হলো ৮০ ডলার পে করতে কেন এত কষ্ট? কারণ এই আশি ডলার আমার কামাই করতে পুরো একটা দিন কাজ করতে হয়। যদি অবৈধ বালু চুরির টাকায় হাজার হাজার ডলার ঘরে আসতো কিংবা আকস্মিকভাবে সরকারী জমি জবর দখল করে রাতারাতি কোটি টাকা কামাই করতে পারতাম তাহলে এই জরিমানার টিকিট ইয়েতে ঘষে ফেলে দিতাম। অবশ্য এই দেশে সেটা করা যায় না, অর্থাৎ ইয়েতে ঘষলেও গোপনে করতে হবে এবং জরিমানা যত ছোট বা বড় এমাউন্টই হোক পে করতে হবে।
কাজেই একটি অন্যায় অপর অন্যায়ের সাথে জড়িত।
স্পিড লিমিট অতিক্রম করে গাড়ী চালানো যেমন অবৈধ তেমনি অবৈধ ইনকাম আরো বেশী অবৈধ। হালাল ইনকাম হলেই আপনাকে জরিমানার টাকা দিতে গেলে শরীর পুড়ে যাবে। আর যদি হারাম ইনকাম হয় গা’য়ে লাগবে না। হারাম ইনকাম কে বন্ধ করবে? যিনি করবেন তিনি নিজেই যদি হারাম ইনকাম করেন, তার নিয়োগই যদি অবৈধ হয় তাহলে কিভাবে তিনি বন্ধ করবেন? অর্থাৎ কোন কাজ হবে না। একটার সাথে অপরটা জড়িত। আরো কিছু কথা আছে এ প্রসংগে পরের লেখায় বলবো।