
সাম্প্রতিক সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহারের পর কানাডার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্বেগ ও হতাশা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হাজারো আফগানকে কানাডায় পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফেডারেল সরকার। কানাডার অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের সপ্তাহের পর সপ্তাহ চাপের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবারের ওই ঘোষণাটি এলো। কারণ, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার দেশজুড়ে তালেবানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিয়েছে। যেসব এলাকা তালেবানরা দখলে নিয়েছে তার মধ্যে কান্দাহার প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলও রয়েছে এবং গত ১৩ বছরের মিশনে কানাডিয়ান সেনাবাহিনী এই অংশে সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে অবস্থান করেছিল। কোরিয়ান যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধটিও তারা এখানেই করেছে। ২০১৪ সালে সেনাবাহিনী দেশে ফিরিয়ে আনার আগ পর্যন্ত কানাডা ১৫৮ জন সৈন্য ও সাতজন বেসামরিক নাগরিককে হারিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছেন তালেবানদের হামলায়।
যুদ্ধফেরত সেনারা বলছেন, যেসব আফগান তাদেরকে সাহায্য করেছিলেন তারা ও তাদের পরিবারগুলো এখন হুমকির মধ্যে রয়েছে। কারণ, তালেবানরা তাদের দখলকৃত এলাকা বাড়াচ্ছে এবং বিদেশি সৈন্যদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিৎ সজ্জন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক গারনোর সঙ্গে যৌথভাবে প্রক্রিয়াটির নেতৃত্বে রয়েছেন অভিবাসন মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো। তিনি বলেন, কার্যক্রমটির নিরাপত্তাজনিত কারণে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ উল্লেখ করা খুবই সংবেদনশীল বিষয়। আফগান ও কানাডিয়ান দলের নিরাপত্তার কারণে কিভাবে ও কখন কার্যক্রমটি শুবেরু হ সেটি আমাদের গোপন রাখতে হচ্ছে।
মেন্ডিসিনো বলেন, কানাডার সঙ্গে কাজ করার কারণে কারা হুমকির মুখে আছে তাদের চিহ্নিত করতে মাঠ পর্যায়ে কাজের উদ্দেশে সরকার এরই মধ্যে কয়েকটি দল গঠন করেছে। এরপর যারা পুনর্বাসনের যোগ্য বিবেচিত হবেন তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আবেদনগুলো দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ করবেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। আমাদের নজরে ঠিক তারাই রয়েছেন কানাডার সরকারের সঙ্গে যাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আছে। যুদ্ধের মিশনে কানাডার সেনাবাহিনীর পক্ষে দোভাষী হিসেবে কাজ করা আফগানরাই কেবল নন, কানাডিয়ান অ্যাম্বাসিতে কর্মরত সাবেক ও বর্তমান কর্মী ও তাদের পরিবারও এর আওতায় পড়বেন।
কানাডায় বসবাসকারী কোনো আফগান নাগরীক যদি মনে করেন যে আফগানিস্তানে থাকা তাদের পরিবার হুমকির মধ্যে আছে এবং তাদেরকে কানাডায় আনা দরকার তাহলে তাদেরকে সরসারি তার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের আহ্বান জানিয়েছেন অভিবাসন মন্ত্রী।