
টালিউডের একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক অভিষেক চ্যাটার্জি মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ভোরে নিজবাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৫৭ বছর বয়সী এই অভিনেতা। তার মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ভেঙে পড়েছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। জনপ্রিয় এ অভিনেতার প্রয়াণে নিস্তব্ধ টালিপাড়া। সহকর্মীর আকস্মিক মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ শতাব্দী রায়।
তিনি বলেন, ও আমার বহু ছবির নায়ক।রবিবারে ওকে শেষবার দেখেছি। তখনও জানি না, ওটাই আমাদের শেষ দেখা। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না অভিষেক নেই। চোখের জল বাঁধ মানছে না। আমায় স্টার জলসার রিয়্যালিটি শো-এর জন্য বলেছিল। রাজি হইনি। তখন অভিষেক বলেছিল, একটা ভিডিও করে দিতে। রাজি হয়েছিলাম। বারবার আমার বাড়িতে আসতে চেয়েছিল। বলেছিলাম, ‘দিল্লি চলে যাচ্ছি। এখন এসো না। দুদিন পরে এসো।’ এভাবে ও একেবারে চলে গেল! আমি কি ওকে বরাবরের মতো আসতে বারণ করেছিলাম?
এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না, আমার ‘নায়ক’ নেই! খাটে শুয়ে আছে। টিভির পর্দায় দেখছি। মুখে-চোখে কী প্রশান্তি! যেন রাজার মতো ঘুমিয়ে রয়েছে। ডাকলেই হাসতে হাসতে উঠে পড়বে। দেখছি আর বলছি, চিকিৎসক ভুল বলেননি তো! হয়তো অন্য চিকিৎসক ওকে দেখে বলবেন, কিচ্ছু হয়নি! অভিষেক একদম সুস্থ।
কী করে কলকাতায় ফিরব? কী করে অভিষেককে শেষ দেখা দেখব?
যেমন ভালো নায়ক, তেমনি সুপুরুষ। তেমনই ভালো মানুষ। প্রতিবেশী হিসেবেও তুলনা হয় না। একই ভবনের ১২ তলায় থাকি আমি, সাত তলায় অভিষেক। আমার বাড়িতে পরিচারিকা নেই। অভিষেককে বলেছি, একজন পরিচারিকার ব্যবস্থা করে দিতে? সঙ্গে সঙ্গে ও পরিচারিকা জোগাড় করে দিয়েছে। অভিনয় ছাড়াও ওর সঙ্গে শো করতে গিয়েছি। অভিষেকের জনপ্রিয়তা দেখার মতো! বিশেষ করে মেয়েরা ওর জন্য পাগল হতেন। সেই সময় টলিউডকে যে চার স্তম্ভ কাঁধে করে ধরে রেখেছিলেন, তাদের অন্যতম অভিষেক। ব্যবতার খুবই অমায়িক, নেই কোনো চাহিদা। একজন নিরহঙ্কার মানুষ।
খুব রাগ হচ্ছে অভিষেকের ওপর। কেন নার্সিংহোমে গেল না চিকিৎসা করাতে? কার ওপরে এত অভিমান? গেলে হয়তো সঠিক চিকিৎসা হত। সুস্থ হয়ে যেত। নাকি, সেটা হওয়ার নয় বলেই হল না?
অভিষেক কি টের পেয়েছিল ও না ফেরার দেশে যাচ্ছে? তাই শেষ বারের মতো দেখা করার জন্য অত আকুতি জানিয়েছিল? খুব আফসোস হচ্ছে। এই আপসোস রাখি কোথায়!
সূত্র : আনন্দবাজার