
” গত বিশ বছরে হাত খরচের জন্য সে একটি টাকাও আমার হাতে দেইনি। আমাকে কোন আয় রোজগারও করতে দেয়না। আমি আর ওর সাথে থাকতে চাইনা।”
টরেন্টোর সিটির এক শেল্টারে কেস ওয়ার্কারের কাছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছিলেন মধ্য বয়স্ক এক ইরানী নারী।
তিনি তাঁর স্বামীর সাথে এক ছেলে আর মেয়ে নিয়ে রেফুজি হয়ে এসেছেন কানাডায় বছর খানেক আগে।
তিনি বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন।
এ মুহুর্তে তাঁর স্বামী তাঁর সাথেই আছেন। স্বামীর যুক্তি হল, ” সে যা চায় তাই আমি তাকে দেই। কয়েক দিন আগে তাকে আই ফোন কিনে দিয়েছি। আবার তাকে আলাদা করে টাকা দিতে হবে কেন?
সে বলুক তার কি লাগবে? আমি দিব। কিন্তু তার হাতে কোন মানি দিতে পারবনা। আমার সাফ কথা। আমি ইনকাম করি। বাড়ি ভাড়া দেই, খাবার কিনি। কাপড় কিনি। সে তো কোন কামাই করেনা।”
মহিলার কান্না থামছেই না। বারবার হিজাবের ঝুলন্ত অংশ দিয়ে চোখ মুছছে। পুরুষটি তাঁকে কোন কথা বলতে দিচ্ছে না। দশ বছরের ছেলেটি বলছে, ” আম্মু তুমি চিৎকার করছো কেন? আব্বু তো ঠিকই বলেছে। তোমার কিসের জন্য মানি দরকার। আব্বু তো তোমাকে সবই দিচ্ছে।”
ছেলে বাবাকে সাপোর্ট করে যাচ্ছে। পাশে বার বছরের মেয়েটি মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।
” আমি ইরানে থাকতে আমার স্বামী যখন আমাকে মারত, তখন আমি আমার ভাইদের কাছে অভিযোগ করতাম। আমার ভাইয়েরা বলত, স্বামী একটু মারবেই। এতে দোষের কিছু নেই। যে ভালবাসে সে তো একটু শাসন করবেই।” মহিলা কান্না থামিয়ে বলে যেতে লাগল।
” ইসলাম ধর্ম ভাল। কিন্তু মুসলমান পুরুষরা ভাল না।” মহিলার অভিযোগ।
ঘটনাটির বিবরন দিচ্ছিলেন আমার এক বন্ধু যিনি সিটিতে চাকুরী করেন। এর পরে পরিবারটির অবস্থা কী হতে পারে আপনারা কিছুটা আঁচ করতে পারছেন। পরিবারটি হয়ত ভেঙ্গে যাবে। যদি তাই হয়, তাঁহলে দোষটি কার? পুরুষটির, নাকি মহিলাটির নাকি, নাকি আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার?