
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন জোরদার হওয়ায় সেখানে ন্যাটো মিত্রদের সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে বিশ্বাস করেন প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কানাডিয়ান। যদিও অর্ধেক কানাডিয়ান কূটনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী।
লেজার পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমনটাই উঠে এসেছে। গত শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত অনলাইনে ১ হাজার ৫১৫ জন কানাডিয়ানের ওপর সমীক্ষাটি চালায় লেজার।
রাশিয়ার আগ্রাসনের একেবারে শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় রসদ, অস্ত্র ও অবরোধ আরোপের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে আসছে ন্যাটো। তবে যুদ্ধের জন্য কোনো সৈন্য মোতায়েন করেনি নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অরগানাইজেশন বা ন্যাটো।
লেজারের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান বোর্ক বলেন, জনগণ কূটনীতি ও অবরোধের সম্ভাবনার কথা বলে আসলেও এই প্রথম সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার কথা বললেন।
কূটনৈতিক উপায়ে যে এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব ৪৯ শতাংশ কানাডিয়ান এখনও তা বিশ^াস করেন। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার সংঘাত দীর্ঘ হবে বলে মনে করেন ৬৪ শতাংশ কানাডিয়ান। তাদের মতে অনেক বছর ধরে চলতে পারে এ সংঘাত।
৬৫ শতাংশ কানাডিয়ান মনে করেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের আরও অবরোধ আরোপ করা উচিত। এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে গ্যাসের দাম আরও বেড়ে গেলেও। অন্যদিকে ৬২ শতাংশ কানাডিয়ানের ধারণা, অবরোধের ফলে সরাসরি পুতিন নন, রাশিয়ার জনগণ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অবরোধ পুতিনকে পিছু হটতে বাধ্য করতে পারে বলে মনে করেন সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মাত্র ৩৫ শতাংশ কানাডিয়ান।
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সংঘাত অবসানে কানাডার বড় ভূমিকা রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ক্রমেই এই ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত এটা বিশ^যুদ্ধের দিকে যেতে পারে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া তিন-চতুর্থাংশ কানাডিয়ান মনে করেন, পরিস্থিতি যা তাতে করে তৃতীয় বিশ^যুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সংঘাত যখন শুরু হয় সে সময় একই ধরনের মনোভাব পোষণ করেছিলেন ৬৬ শতাংশ কানাডিয়ান।
পরিস্থিতি খারাপ হলে পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন বলে বিশ^াস প্রায় ৪৭ শতাংশ কানাডিয়ানের। অর্থাৎ বোর্কের মতে ভয়ের বিষয়টি উচ্চ মাত্রায় রয়েছে।
নর্থ আটলান্টিক ট্রিটির অনুচ্ছেদ ৫ এর আওতায় ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশের ওপর আক্রমণকে ন্যাটোভুক্ত সব দেশেল ওপর আক্রমণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ন্যাটোকে অবশ্যই সহায়তা করতে হবে।
সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দুই-তৃতীয়াংশ কানাডিয়ান। এর ফলে ন্যাটোর সদস্য
দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারবে।
ইউক্রেন বর্তমানে ন্যাটোর অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে তাদেরকে ন্যাটোর সদস্য করার আহ্বান জানিয়ে আসছে ইউক্রেন।
যুদ্ধে কে জিতবে? এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ৪১ শতাংশ কানাডিয়ান। বাকি ৫৯ শতাংশেল কাছ থেকে বিভক্ত মতামত এসেছে। ২৭ শতাংশেল মতে, রাশিয়া এই যুদ্ধে জয়লাভ করবে। ইউক্রেন সফলভাবে রাশিয়াকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন ৩৩ শতাংশ কানাডিয়ান।