
২০২০ সালের গ্রীষ্মের তুলনায় কানায়ায় গ্যাসোলিনের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। জুলাইয়ে খাবারের দাম বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ১ শতাংশ। গ্রোসারি পণ্যের সার্বিক মূল্য ১ শতাংশ বাড়লেও নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে অনেক বেশি। উদাহরণ হিসেবে, জুলাইয়ে মাংসের দাম বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
গ্রীষ্মের দাবানল এবং কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে খরার প্রভাবে ফলে কানাডিয়ানদের আরও মূল্যবৃদ্ধির চাপে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। ইউনিভার্সিটি অব গুয়েল্ফের ফুড, এগ্রিকালচার অ্যান্ড রিসোর্স ইকোনমিকসের মাইকেল ভন মাসো এর আগে গ্লোবাল নিউজকে বলেছিলেন, উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে সর্বশেষ আমরা বড় ধরনের খরা দেখেছিলাম ২০১৩ ও ২০১৪ সালে। সে সময় মাংসের দাম বেড়ে গিয়েছিল ২৫ শতাংশ।
এদিকে কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত সমগ্র কানাডায় বাড়ির দাম বেড়েছে গড়ে ৩২ শতাংশ এবং ছোট শহরগুলোতে বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বাড়ির ক্রয় ক্ষমতার বিষয়টি এক সময় ভ্যানকুভার ও টরন্টোতে সীমাবদ্ধ থাকলেও মহামারি সেটিকে জাতীয় পর্যায়ে টেনে এনেছে।
এদিকে, উপকূল থেকে উপকূলে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ ক্রয় ক্ষমতাকে কানাডার আসন্ন নির্বাচনের প্রধান ইস্যুতে পরিণত করেছে। ভোটারদের শীর্ষ পাঁচ অগ্রাধিকারের মধ্যে আছে কিচেন টেবিল অর্থনীতিও। গ্লোবাল নিউজের জন্য ইপসসের পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ক্রয় ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি ইস্যু তৈরি করছে। একদিকে মূল্যস্ফীতির ক্রমবৃদ্ধি সব বয়সের, আয়ের ও রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের তাদের ট্যাংক ও গ্রোসারির ঝুড়ি ভরতে অতিরিক্ত ব্যয়ের দিকে চালিত করছে। অন্যদিকে আবাসন থেকে শুরু করে চাইল্ডকেয়ার ও উচ্চ শিক্ষায় বাড়তি ব্যয়ের কারণে যে ক্রয় ক্ষমতার ঘাটতি তা তরুণ ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
কিচেন টেবিল নিয়ে কানাডিয়ানদের উদ্বেগ রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে সামলাবে তা নির্বাচনের ফলাফলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন ইপসস পাবলিব অ্যাফেয়ার্স কানাডার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যারেল ব্রিকার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দল বিশেষ তৃতীয় দল এনডিপি ও গ্রিন পার্টি সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার উপাত্তে জুলাইয়ে কানাডার মূল্যস্ফীতি ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ দেখানোর পর কনজার্ভেটি নেতা এরিন ও’টুল প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে নিয়েই বিদ্রুপ করেন। ২০১১ সালের পর এতো বেশি হারে মূল্যস্ফীতি দেখেনি কানাডা।
কুইবেক সিটিতে সাংবাদিকদের ও’টুল বলেন, অর্থনীতি নিয়ে লিবারেল সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিই দাম বাড়াতে যথেষ্ট। এজন্য এনডিপি নেতা জাগমিত সিংহেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, লিবারেল ও নিউ ডেমোক্র্যাটরাই মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী।