
সব সময়ই একটা উদাহরণ তৈরী করতে চেয়েছিলাম। নষ্ট ধারার বিপরীতে ন্যায় নীতিবোধ সম্পন্ন নিরপেক্ষ ও সবার জন্য মঙ্গলজনক ধারা। সেই বিবেচনাতেই যখন ৩৭ বছর আগে গোয়ালন্দে শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করি, তখন মাথায় আসে কাকে দিয়ে উদ্বোধন করা যায় বা কাকে প্রধান অতিথি করা যায়! সেই বিবেচনাতেই গোয়ালন্দের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক যিনি তখন আমাদের শিক্ষক আবার আমাদের অনেকের বাবা দাদারও শিক্ষক ছিলেন সেই প্রবীণ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু সত্য কুমার সিংহ স্যারকে দিয়ে পাঠাগারটি উদ্বোধন করি।
সেটা সেই আমলে অবশ্যই একটা ব্যতিক্রমধর্মী নজির ছিল যদিও সেই ধারাটা আজ আর কেউ ফলো করেন না। কী ফলো করেন, সমাজের উঁচু আসনে বসার, ফিতা কাটার, অতিথি হবার যোগ্যতা না থাকলেও কারা আজ সেগুলো করছে, কেন কারা কিভাবে কোন যোগ্যতায় আজ প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি হন তা সকলেই জানেন, নুতন করে বলার কিছু নেই।
তবে সময়ের পরিক্রমায় আমাদের সেই ধারাটি এখনো অব্যাহত আছে। শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও পাঠাগারকে বই সমৃদ্ধ করে নুতন ভাবে চালু করা হয়েছে। পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি কল্পে গত জানুয়ারী মাসে ঘোষণা করেছিলাম পুরো মাস ব্যাপি যারা পাঠাগারে বই পড়তে আসবেন, তাদের মধ্যে লটারি করে পুরুস্কার দেয়া হবে। সেই মোতাবেক লটারি করে গত ৭ই এপ্রিল বিজয়ীদের মধ্যে পুরুস্কার বিতরণ করা হয়।
প্রথম পুরস্কার ছিল একটি মোবাইল ফোন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন আমার প্রাইমারী স্কুলের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, যার ভয়ে আমরা ক্লাস টু তে পড়াকালীন তটস্হ থাকতাম সেই বোরহান উদ্দিন আহমদ স্যার। খুবই স্বল্প পরিসরে ছোট্ট অনাড়ম্বর অথচ মহতী এই আয়োজনে স্যার ক্লাবে এসেছিলেন এজন্য আমি মহাখুশী। স্যারকে ধন্যবাদ, আয়োজনকারীদেরকে ধন্যবাদ। যাদের সময় আছে আসুন বই পড়ুন, গঠনমুলক নৈতিক সমাজ গঠনে সহযোগীতা করুন। এই বিনিয়োগ আপনার বিফলে যাবে না।