
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের পর বিয়ে। কিন্তু বিয়ের দেড় মাসের মধ্যে মোহভঙ্গ হয়েছিল যুবকের, নজর দেন স্ত্রীর বান্ধবীর দিকে। তাকে কুপ্রস্তাবও দেন ওই যুবক। বান্ধবীর সাথে স্বামীর এমন আচরণে জানতে পেরে তাকে খুনের পরিকল্পনা করেন স্ত্রী। তাতে শামিল হয়েছিলেন সেই বান্ধবী এবং তার স্বামীও।
ঘটনাটি ভারতের হুগলির শ্রীরামপুরের। ওই যুবকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধারের পর তদন্তে নেমে এমনটাই ধারণা তদন্তকারীদের। ওই যুবককে খুনের অভিযোগে রবিবার তার স্ত্রী, বান্ধবী এবং বান্ধবীর স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে লাশটি উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির সুভাষ রোডের বাসিন্দা শুভজ্যোতি বসু (৩১)-র। গত ১৩ মার্চ তিনি পূজা নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েকদিন পর পূজা তার বান্ধবী শর্মিষ্ঠা অধিকারীর বাড়ি উত্তরপাড়ায় চলে যান। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে মাঝেমধ্যে উত্তরপাড়ায় যেতেন শুভজ্যোতি। গত ১ মে পূজার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরের দিন শ্রীরামপুর থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।
এরপর শুভজ্যোতিকে খুনের মূল অভিযুক্ত সুবীর অধিকারীকে (শর্মিষ্ঠা অধিকারীর স্বামী) গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি, উত্তরপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় শর্মিষ্ঠা এবং পূজাকে। পুলিশের দাবি, তারা দু’জনেই পেশায় যৌনকর্মী।
শ্রীরামপুর থানায় চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি অরবিন্দ আনন্দ বলেন, ঘটনার দিন একটি ইটভাটায় সুবীর এবং শুভজ্যোতি মদ্যপান করেন। সে সময়ই শুভজ্যোতিকে খুন করে সুবীর। শুভজ্যোতির গলায় চপার চালিয়ে ধড় থেকে দেহ আলাদা করে দেয় অভিযুক্ত। বিচ্ছিন্ন মাথা গঙ্গায় ফেলে দেয় আর দেহটি নর্দমায় ফেলে দেয়।
তদন্তকারীদের দাবি, পূজার বান্ধবী শর্মিষ্ঠাকে কুপ্রস্তাব দেওয়াতেই শুভজ্যোতিকে খুনের পরিকল্পনা করেন তিনজন। স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক মানতে পারত না সুবীর। এর আগে বরাহনগর থানা এলাকায় একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল সে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শর্মিষ্ঠাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ায় একজনকে চপার দিয়ে কুপিয়েছিল সুবীর। যুবকটি প্রাণে বেঁচে গেলেও সুবীর জেল খাটে। গত মাসে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।