
বাংলাদেশী কানাডিয়ান কমিউনিটি সার্ভিসেস (বিসিএস) এর একদল নারীবাদী নেতৃত্বের উদ্যোগে কোভিড-১৯ এর প্রভাব ও অন্যান্য কারণে সমাজে ‘নারী বিদ্বেষ ও লিঙ্গ সমতা’ বিষয়ক ১৮ মাসের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সেই উপলক্ষ্যে একটি সংবাদ সম্মেলন ও নৈশভোজে যোগ দিই গত সোমবার বিসিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে।
সেখানেই মনে প্রশ্ন জাগে ’বিদ্বেষ’ শব্দটি নিয়ে। বিদ্বেষ কি শুধু নারী পুরুষে? যে যেখানে ক্ষমতাবান, অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী তিনি তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের উপর বৈষম্য করেন, বিদ্বেষ করেন। কথা হলো আমি যেখানেই যাই আমার ছায়াও সেখানে যায়। আমি আগে বাংলাদেশে ছিলাম, সেখানকার সংস্কৃতি, দীর্ঘদিনে গড়ে উঠা অভ্যাস আমার সাথেই আমি বহন করে কানাডায় নিয়ে এসেছি।
যিনি সৌদি কুয়েত থেকে এসেছেন তিনি সেখানকার সংস্কৃতি, রীতি নীতি বহন করে নিয়ে এসেছেন। যার ফলে দেখা যায় দীর্ঘদিন এই কানাডিয়ান সমাজে বাস করেও আমরা অনেকেই অনেক ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করতে পারি না। সেটাও নির্ভর করে কে কোথায় কাজ করেন, বাস করেন, কার সংগে উঠাবসা করেন ইত্যাদির উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কেউ যদি ঢাকা থেকে প্লেনে উড়ে এসে দশ বছর টরন্টোর কোন মিনি ঢাকা শহরে বাস করে তাহলে তিনি মুলত ঢাকায়ই বাস করেন বলে কানডিয়ান মুল্যবোধগুলির খুব একটা সংস্পর্শে আসতে পারেন না বা প্রাকটিস করতে বাধ্য থাকেন না। ফলে বিশ বছর পরে ঢাকায় ফিরে গেলেও তার আঁচার ব্যবহার দেখে কেউ কেউ বলে বসতেই পারেন, হেই তুমিতো দেখি একটুও বদলাও নি!
আসলে সমাজ থেকে বিদ্বেষ ও বৈষম্য দুর করতে হলে বা নিদেনপক্ষে কমিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশ কানাডা তথা বিশ্বের ভাল সংস্কৃতি, ভাল প্রাকটিসগুলোকে ব্লেন্ড করে খারাপগুলোকে বর্জন করার মানসিকতা থাকতে হবে। সেটা নির্ভর করে কে কোথায় কাজ করেন, পড়ালেখা করেন অথবা বাস করেন তার উপর। যেমন এখানে এমনসব কর্মক্ষেত্র রয়েছে যে আপনি দরজা দিয়ে ঢোকার পর নারী বিদ্বেষতো দুরের কথা কোনরকম হ্যারাজমেন্ট করলে সাথে সাথে চাকুরী হারাবেন এমনকি জেল জরিমানাও হতে পারে। প্রশ্ন হলো ‘হ্যারাজমেন্ট’, ‘বুলিয়িং’, ’নেইমকলিং’ সম্পর্কে আমরা কতজন ধারনা বা জ্ঞান রাখি? এগুলো করলে ডিফেমেশন বা স্লান্ডার নামে মিলিয়ন ডলারের মামলা হতে পারে সেটাই বা কতজন ধারনা রাখি?
আমি বিসিএসের প্রজেক্ট “ফাইট মিসোজিনি, এ্যাচিভ জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি’র সফলতা কামনা করি।