
কানাডাতে আসার পর ছোটখাট নানা রকমের চাকুরী করেছি। কেউ কেউ এগুলোকে সারভাইভাল জব বলে থাকেন। আমার কাছে মনে হয়, সব ধরনের জবই সারভাইভাল। মানুষতো আর শখ করে টাকা কামাই করেনা। বেঁচে থাকার জন্যই চাকুরী অথবা ব্যবসা করে। বরং এগুলোকে স্বল্পবেতন বা স্বল্পসুবিধা সম্বলিত কায়িক পরিশ্রমের জব বলা যায়। এগুলোকে আবার ব্লু-কলার জবও বলা হয়। কারন এগুলো করতে শরীরে ধুলোবালি লাগে। তাই বিশেষ ধরনের পোষাকাদি পরিধান করে এগুলো সম্পাদন করতে হয়। পোষাকগুলো সাধারনত কালারফুল হয় বিশেষ করে ব্লু।
এ ধরনের জবগুলো যারা করেন, তাঁরা সাধারনত খেঁটেখাওয়া সাধারন মানুষ। স্বল্প শিক্ষিত। রেগে গেলে কাজের মধ্যে তারা নানা রকম খিস্তিখিউর করে। এগুলো বলতে বলতে একসময় অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়।
আমিও যেহেতু এরকম মানুষদের সাথে বেশ কিছুদিন এ রকম জব করেছি, সেহেতু আমিও এগুলোর কিছু কিছু বলা অভ্যাস করে ফেলেছিলাম। পরে অবশ্য ছাড়তে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। কথায় বলে চন্দন তলায় থাকলে চন্দনের বাও (বাতাশ) লাগে, আর সরা তলায় থাকলে সরার বাও(বাতাশ) লাগে।
তো কোন একদিন কাজের ফাকে আমার একজন কলিগকে জিজ্ঞেস করলাম:
: হে শন, হাউ আর ইউ?
: F*king নট গুড?
: হয়্যাট হ্যাপেন্ড?
: টুডে, ম্যানেজার গেভ মি শিট?
: হয়্যাট ডিড ইউ ডু?
: আই ওয়াজ 15 minutes লেট টুডে, কজ আই ওয়াজ F*ked up ইন দ্য ট্রাফিক জ্যাম।
: ডান্ট ওরি। ইট গনা বি ওকে।
এরকম সে বলে যেতে লাগল। প্রত্যেক বাক্যেই দুটো বিশেষ শব্দ ব্যবহার অব্যাহত রাখল সে। যাহোক সেটা লম্বা ডায়ালোগ।
অত:পর এগুলো শুনতে শুনতে আমিও ওগুলোর বেশ কিছু রপ্ত করে ফেলেছিলাম। আমারও রাঁগ উঠলে এগুলো মাঝে মাঝে বলতাম। বিশেষ করে “শিট” শব্দটি। কখনো কোন কিছুতে ভূল করে ফেললেই উক্ত শব্দটি মুখে এসে পরে। এমনকি বাচ্চাদের সামনেও। বাচ্চারা তখন আমাকে সাবধান করে দেয়।
: বাবা তুমি কিন্তুু বাজে শব্দ ব্যবহার করছো।
: সরি, ভূল হয়ে গেছে।
: আমরা তোমার মুখ থেকে এগুলো শুনতে চাইনা।
: কখনোই না।
শিক্ষা:
খারাপ অভ্যাস যে কোন বয়সেই মানুষ শিখে ফেলতে পারে।
পিতামাতারাই শুধ বাচ্চাদের শিখায় না, বাচ্চারাও বাবামাকে শেখায়।