7.8 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

‘পোস্টই যদি না পাই তাইলে জীবন রাইখা লাভ কী?’ আওয়ামী লীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা

‘পোস্টই যদি না পাই তাইলে জীবন রাইখা লাভ কী?’ আওয়ামী লীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা - the Bengali Times
মো মনিরুজ্জামান চৌধুরী মনু মিয়া

পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের কমিটিতে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এবার সেই কমিটিতে স্থান হয়েছে সাধারণ সদস্য পদে। তাই কমিটি ঘোষণার ১২ ঘণ্টার মাথায় অভিমানে গভীর রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান এক নেতা। অবশ্য পরিবারের সদস্যদের কারণে এ যাত্রা বেঁচে যান তিনি। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পটুয়াখালীতে এ ঘটনা ঘটে। অভিমানী আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী মনু মিয়া। তিনি পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের পরপর দুইবারের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্য।

শনিবার (৬ আগস্ট) বিকেলে মনু মিয়ার আত্মীয়রা তার ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি নিয়ে শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

- Advertisement -

এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই নেতা জানান, ‌’রাজনীতি কইরা শুধু পোস্ট চাইছি, ওইডাও যদি না পাই তাইলে জীবন রাইখা লাভ কী। হেই জন্যই মরতে চাইছিলাম।’

আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান চৌধুরী মনু মিয়ার ভাইয়ের মেয়ে সানজিদা সাবরিনা বাঁধন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, দীর্ঘদিন পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীতে ও দুই বার পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মনিরুজ্জামান চৌধুরী মনুকে বর্তমান পৌর কমিটিতে ৪ নম্বর সাধারণ সদস্য বানানোর কষ্টে রাত ১টার দিকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রক্ষা করে।’

একই ধরনের পোস্ট করেন তার বোন সিনথিয়া সাবরিন মৌ। পরবর্তীকালে তাদের পরিবারের অন্যান্যরাও একই পোস্ট শেয়ার করে এবং অনেকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠাতে থাকে। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জানতে চাইলে মনিরুজ্জমান চৌধুরী মনু মিয়া বলেন, পরিবারের সবাই আজীবন আওয়ামী লীগ করে আসছি। আওয়ামী লীগ করে কিছুই পাইনি, টিনের ঘর টিনের ঘরই আছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিএনপির আমলে বার বার হামলার শিকার হয়েছি আমরা। যার প্রমাণ সাংবাদিকরা। রাজনীতি করেছি শুধু পোস্ট পাবার জন্য। অন্য কিছু তো চাই নাই।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুর বারোটার দিকে বিষয়টি আমি লোকমুখে জানতে পারি। তারপর যখন কমিটির কাগজ হাতে পেয়েছি তখন থেকেই মনটা খুব খারাপ ছিল। কোনোভাবেই মানতে পারি নাই যে, আগের কমিটিতে যে ছিল দুইবারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকে রাখা হয়েছে সদস্যপদে, তাও আবার চার নাম্বার। হয় আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকে ওপরের কোনো পদে রাখবে নাহয় বাদ দেবে কিন্তু সদস্য তো রাখতে পারে না। এতো অপমান এতো লজ্জা দেয়ার তো কোনো মানে হয় না। ‘রাজনীতি কইরা যদি পোস্ট না পাইয়া এত অপমানিত হই তাহলে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। এত বছর রাজনীতি কইরা যদি এই পাই তাহলে জীবন রাইখা লাভ কী?’ জানান, পদ না পাওয়ার অভিমানেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি শুক্রবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানার জন্য ফোন করেছিলাম। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কিছু ভাবছেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে মনু মিয়া বলেন, আগে একটু সুস্থ হয়ে উঠি তারপর সিদ্ধান্ত নিবো। যেহেতু রক্তমাংসে আওয়ামী লীগ ভোট তো নৌকায়ই দিতে হবে। কমিটিতে থাকবো কি থাকবো না সেটি সুস্থ হয়ে সিদ্ধান্ত নবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আবদুল মান্নান জানান, লোকমুখে শুনেছি সে অসুস্থ। কিন্তু কেন অসুস্থ তা জানি না। আর আমাকে কেউ ফোন দেয়নি।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে দুই বছর পর গত ২৭ জুলাই পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেই কমিটি প্রকাশ পেয়েছে ৫আগস্ট। মো. শাহজালাল খানকে সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান মনিকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষিত হয়।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles