রাজধানীর টিটি পাড়া এলাকায় বুধবার মধ্যরাতে রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সার্জেন্ট খন্দকার মহিউদ্দিন ফারুক। হঠাৎ তার চোখে পড়ে স্টারলাইন বাস কাউন্টারের সামনে ভুল জায়গায় পার্কিং করে আছে একটি সিএনজি অটোরিকশা (ঢাকা-দ-১৪-০০২৯)। রাস্তা ফাঁকা করতে সিএনজি অটোরিকশার কাছে গেলে ফারুক দেখতে পান দুইজন নারী একটি লাগেজ ও কয়েকটি ব্যাগসহ সেখানে অপেক্ষমান।
অটোরিকশায় গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করছেন তারা। হঠাৎ দুই নারী এত সংখ্যক ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন জানতে চান সার্জেন্ট। তখন ওই নারী জানান, তাদের এক বোন সৌদি আরব যাবেন। ওই বোনের কাছে চালের গুঁড়া পৌঁছে দেবেন তারা। এসব ব্যাগে চালের গুঁড়া রয়েছে। সবগুলো ব্যাগে চালের গুঁড়ার কথা শুনে সন্দেহ হয় পুলিশের।
যেকোনো একটি ব্যাগ খুলতে অনুরোধ করেন ফারুক। খোলার পরপরই দেখেন, হলুদ স্কচটেপে মোড়ানো গাঁজার বড় বড় পুটলি। মধ্যরাতে চালের গুঁড়ার চালান বলে মাদকের অভিনব পাচার দেখে চমকে উঠেন সার্জেন্ট। তাদের নেওয়া হয় পুলিশ বক্সে। রাতেই খবর দেওয়া হয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। মুগদা থানা পুলিশকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়।
মুগদা থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে আসার পর সবগুলো ব্যাগ খুলে মোট ২০ কেজি গাঁজা ও ১২৭ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করে পুলিশ।
সার্জেন্ট ফারুক জানান, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় মাদক কারবারি ওই দুই নারীর নাম মরিয়ম বেগম সেলিনা ও আছিয়া বেগম আছমা। তাদের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি এলাকার উত্তর বাগবেড় এলাকায়। দীর্ঘ দিন ধরে নানা ছদ্মবেশে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা ও ফেনসিডিলের চালান পাচার করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় মুগদা থানায় সেলিনা ও আছিয়াকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরসেল তালুকদার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। তবে তারা আপন দুই বোন এটা জানিয়েছেন। এই চক্রে আর কারা রয়েছে, এটা বের করার চেষ্টা করছি।
