9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ক্লান্ত লিখে গেছেন ‘জীবনডাই আফসোস’, কিছুই বলে যায়নি শিপা

ক্লান্ত লিখে গেছেন ‘জীবনডাই আফসোস’, কিছুই বলে যায়নি শিপা - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

আশিকা জাহান শিপা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। ক্লান্ত রঞ্জন শীল ডিপ্লোমা-ইন-মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট পাস করে হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করছিলেন। পৃথক ঘটনায় ওই দুই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিপার লাশ উদ্ধার হয়েছে পুকুর থেকে।

ক্লান্তকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় তার মামার বাড়িতে। তাদের দুজনের মৃত্যু নিয়েই ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
আশিকা জাহান প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে যাওয়ার কথা বলে বের হয়েছিল। ওই শিক্ষকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জনে পুলিশ তাকে আটক করেছে। ‘জীবনডাই আফসোস’ লিখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হয় শিক্ষার্থী ক্লান্ত। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

- Advertisement -

ওই দুজনের মৃত্যু কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হয়নি পুলিশ। তবে আশিকা জাহানের পরিবারের অভিযোগ, সেই প্রাইভেট শিক্ষক এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ বিষয়ে জানতে অপেক্ষার কথা বলছে পুলিশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বোর্ডিং মাঠের পাশের পুকুর থেকে রবিবার দুপুরে আশিকা জাহান শিপার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আশিকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের শাহনূর ইসলামের মেয়ে।

পরিবারের লোকজন জানায়, প্রাইভেট শিক্ষকের বাসায় যাওয়ার কথা বলে শনিবার দুপুরে বাসা থেকে বের হয় আশিকা জাহান। স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। রবিবার দুপুরে পৌর এলাকার অন্নদা উচ্চ বিদ্যালয়ের বোর্ডিং মাঠের পাশে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তার লাশ শনাক্ত করে।

নিহত আশিকা জাহানের চাচা সবুজ মিয়া অভিযোগ করেন, আশিকাকে না পেয়ে বায়েজিদের সঙ্গে কথা বললে সন্দেহ হয়। বায়েজিদ নিজে থেকেই পুকুরপাড়ের আশপাশে খুঁজতে বলায় আরো সন্দেহ হয়। বায়েজিদ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে উল্লেখ করে বিচার দাবি করেন তিনি।

আটক প্রাইভেট শিক্ষক বায়েজিদ জানান, তাদের মধ্যে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক। কয়েক দিন আগে তার পরিবারের সদস্যরা দুজনকে রাস্তায় একসঙ্গে দেখে ফেলার পর সে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। শনিবার গভীর রাতে ফোন দিয়েও সে বিয়ের কথা বলে। এতে রাজি না হওয়ায় সে বাসা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। এর পর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি বলে দাবি বায়েজিদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. লেবু মিয়া জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ওই স্কুল শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। বায়েজিদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘জীবনডাই আফসোস’ লিখে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নীহার রঞ্জন শীলের ছেলে ক্লান্ত রঞ্জন শীল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মামার বাড়ি সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। ক্লান্ত সেখানে থেকেই পড়াশোনা করতেন।

রঞ্জনের কাকা অভি শীল জানান, শনিবার রঞ্জন হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করে সকালে বাড়িতে ফেরেন। রাতে তিনি তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেন ‘জীবনডাই আফসোস’। রবিবার সকাল ১০টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব হোসেন জানান, ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে ক্লান্তর লাশ রাখা হয়েছে। কিভাবে কী ঘটেছে সেটা জানার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আপাতত অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles