
দেবযানী মুখোপাধ্যায় ও মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়
সিআইডির বিরুদ্ধে মেয়ের উপর ‘মানসিক চাপ’ তৈরির অভিযোগ তুলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য-রাজনীতিতে চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন সারদা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার তিনি হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মেয়ের জন্য বিচার চান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, শর্বরী সংবাদমাধ্যমে ভয় ও আতঙ্ক মিশ্রিত কাঁপা গলায় কাঁদতে কাঁদতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমার মেয়ে যেন আর অন্য কোনো কেসে ফেঁসে না যায়।’
তার অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী এবং সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ৬ কোটি টাকা নিয়েছেন সারদার কাছ থেকে এ কথা বলার জন্য মেয়েকে চাপ দিচ্ছে সিআইডি। এ নিয়ে বার কাউন্সিলকে চিঠি দিয়েছেন দেবযানী।
অন্যদিকে, মেয়ের উপর ‘মানসিক চাপ’ সৃষ্টির অভিযোগ তুলে সিবিআই ও মানবাধিকার কমিশনকে তিনি নিজেও একটি চিঠি লিখেছেন। সিআইডির কথা না শুনলে তার মেয়েকে ফাঁসানো হতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দেবযানীর মায়ের এই আবেদন।
তিনি বলেন, ‘আমার দিকে একটু তাকান। আমি আর্থিক, মানসিক, শারীরিক, পারিবারিক সব দিক থেকে বিপর্যস্ত। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমার মেয়ে যেন আর অন্য কোনো কেসে ফেঁসে না যায়।’
২০১৪ সাল থেকে দমদম জেলে বন্দি দেবযানী। শর্বরী জানান, গত ২৩ আগস্ট ওই জেলে তিনজন সিআইডি কর্মকর্তা গিয়েছিলেন। ওই দলে ছিলেন সিআইডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তারা দেবযানীকে চাপ দিচ্ছেন। ১৩, ১৪, ১৫’র পর এতদিন পর ২২ এ এসে আবার সিআইডি কেনো। আমি ১২৮টা কেস নিয়ে জর্জরিত। আমাকে একটু দেখুন বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন শর্বরী।
শর্বরীর জানান, শুভেন্দু ও সুজন দুজনের কারও সঙ্গে দেবযানীর কখনো সাক্ষাৎ হয়নি। দেবযানী তাকে জানিয়েছেন সারদার অফিসে ওই দুজনকে কখনো আসতে দেখা যায়নি।
তার দাবি, সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তীকে ৬ কোটি টাকা দেবযানীর সামনেই দেওয়া হয়েছে। এ কথা বলতে বাধ্য করা হচ্ছে দেবযানীকে। কিন্তু আমার মেয়ে জানে না শুভেন্দু ও সুজনকে আদৌ টাকা দেওয়া হয়েছে কিনা। দেবযানী কোনো দিন শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তীর মুখোমুখি হয়নি। সারদার অফিসে কোনো দিন আসতে দেখেনি। সিআইডি আরও নয়টা কেসের কথা বলছে।
তাদের বক্তব্য, দেবযানী এ কথা স্বীকার করলে এই কেসগুলি থাকবে না। না হলে এই কেসগুলি ওপেন করা হবে। যদিও সিআইডির তদন্তকারী সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে আইন মেনে সকল তদন্ত করা হয়। আগামী দিনে আইন মেনেই তদন্ত করা হবে।