
কীভাবে তারা এটা করলো পরিস্কার নয়। এটা কী রাতের অন্ধকারে গোপনে করা হয়েছে? নাকি অন্য কোনোভাবে?
যেভাবেই ঘটুক এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, চ্যাটো লরিয়ের থেকে স্যার উনস্টন চার্চিলের পোর্ট্রেট যারা চুরি করেছে, তারা কাজটি নিখুত পরিকল্পায় করেছে।
রিডিং লাউঞ্জের কাঠের দেওয়ালে ঝোলানো ছবিটা যে আসল নয়, সেটা বুঝতে আট মাসের বেশি সময় লেগেছে। আন্তর্জাতিক শিল্পকর্ম ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অন্টারিওর আইনজীবী বোনি সেগলেদি বলেন, এটা খুবই পূর্বপরিকল্পিত।
শিল্পকর্ম চুরির বিষয়টি সেগলেদিকে অবাক করে না। কিন্তু চার্চিলের পোর্ট্রেট চুরি যাওয়ার ঘটনায় তিনি ঠিকই অবাক হয়েছেন। কারণ, বিষয়টি খুবই বিশেষ।
চার্চিলের লিগ্যাসি নিয়ে যারা দশকের পর দশক ধরে পড়াশোনা করেছেন তাদেরকেও অবাক করেছে বিষয়টি। সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জীবনীকার ও ইতিহাসবিদ এন্ড্রু রবার্টস একে অদ্ভুত বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন।
স্যার উইনস্টন চার্চিল সোসাইটি অব অটোয়ার প্রেসিডেন্ট রন কোহেন বলেন, এটা পিকাসো নয়। আমি বিশ্বাস করি, যেকোনো রাজনীতিকের এটা সবচেয়ে বিখ্যাত ফটোগ্রাফ। আমি এটাকে অসাধারণ ছবি বলে মনে করি।
চ্যাটো লরিয়ের সঙ্গেও পোর্ট্রেটটির গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রয়েছে। ফটোগ্রাফার ইউসুফ কার্শ ১৮ বছর ধরে এই হোটেলেই ছিলেন।
২০ বছর ধরে এখানেই তার স্টুডিও ছিল। ১৯৪১ সালে চার্চিল যখন কানাডার পার্লামেন্টে যুদ্ধকালীন বক্তৃতা দিতে আসেন সে সময় তখনকার কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম লিওন ম্যাকেঞ্জি ইউসুফ কার্শকে চার্চিলের ছবি তোলার আহ্বান জানান। এরপর এক হাত চেয়ারে ও অন্য হাত কোমরে রাখা চার্চিলের ছবিটি তোলেন তিনি।
কার্শ এস্টেটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছবিটির ৩ লাখ ৫০ হাজার প্রিন্ট হয়েছে এবং ১৯৯২ সালে তার মৃত্যুর পর নেগেঠিবটি লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভস কানাডার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর আর কোনো কপি প্রিন্ট করা হয়নি।
এটাই যে ছবিটির একমাত্র কপি তেমন নয়। আবার এটাই একমাত্র মূল ছবি তাও নয়। লন্ডনে সথবি ২০২০ সালে একটি ছবি নিলামে তোলে, যার মূল্য ধরা হয় ২০ হাজার ২৬ হাজার ডলারের মধ্যে। তবে শেষ পর্যন্ত কত মূল্যে ছবিটি বিক্রি হয়েছিল তা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি নিলাম হাউজটি।