
যৌনবাহিত রোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত বছর সিফিলিস রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২৬ শতাংশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে, মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের প্রতি যৌন রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা ত্বরান্বিত ও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা লেন্দ্রো মিনা বলেছেন, আমরা যৌনতাবাহিত রোগ নির্ণয় ও বেড়ে চলা প্রতিরোধে কাজ করছি।
যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর ধরেই গনোরিয়া ও সিফিলিসে আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২১ সালে সিফিলিসে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। এইচআইভি রোগীর সংখ্যাও ২০২১ সালে ১৬ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া চলতি বছর মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। কারণ, মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটছে মূলত পুরুষদের সমকামি যৌনতার মধ্য দিয়ে।
এ পরিস্থিতিকে দেশটির ন্যাশনাল কোলিশন অব এসটিডি ডিরেক্টরসের নির্বাহী পরিচালক ডেভিড হার্ভে ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বার্মিংহামের আলাবামা ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মাইক সাগ বলেছেন, এটি খুব সাধারণ ঘটনা। যখন মানুষ অরক্ষিত যৌন মিলন করে, তখন যৌনতাবাহিত রোগ বেশি সৃষ্টি হয়।
বিশেষজ্ঞরা এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কনডমের ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। এছাড়া কেউ যৌন রোগে সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, তা পরীক্ষা করার জন্য টেস্ট কিট রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
সিফিলিস হলো একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। যা যৌনাঙ্গে ঘা হিসেবে দেখা দেয়। এটির চিকিৎসা না করা হলে গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
১৯৪০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সিফিলিস সংক্রমণ হ্রাস পায়। কিন্তু ২০০২ সালের দিকে সিফিলিস আবারও বাড়তে শুরু করে। মূলত সমকামী ও উভকামী পুরুষদের মধ্যে এটির মাত্রা বেশি দেখা যায়। ২০১৩ সালে সিফিলিসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২০ সালে এ রোগে আক্রান্ত সংখ্যা ৪১ হাজার ৭০০-তে পৌঁছে। আর ২০২১ সালে সিফিলিসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ হাজারেরও বেশি।
যৌনরোগে আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলন করা পুরুষ। কালো, ল্যাটিন ও স্থানীয় আমেরিকানদের মধ্যে যৌন রোগের হার বেশি। যদিও পুরুষদের তুলনায় নারীদের আক্রান্তের হার কম। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন যৌন রোগে নারীদের আক্রান্তের সংখ্যাও গত বছর ৫০ শতাংশ বেড়েছে।