9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

স্বামী-স্ত্রী কত দিন আলাদা থাকতে পারবে?

স্বামী-স্ত্রী কত দিন আলাদা থাকতে পারবে? - the Bengali Times

মুয়াবিয়া ইবনে হায়দা (রা.) বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের প্রতি আমাদের স্ত্রীদের কী অধিকার আছে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা যখন খাবে তাদেরও খাওয়াবে, যখন খাবে তাদেরও খাওয়াবে, যখন তোমরা কাপড় পরবে তাদেরও পরতে দেবে। তাদের চেহারায় মারবে না, গালগন্দ করবে না। তাদের তোমাদের ঘরেই থাকতে দেবে, অন্য কোথাও না। ’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২১৪২)।

- Advertisement -

উল্লিখিত হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারা পৃথক থাকবে না।

কখন বিছানা আলাদা হবে : এই বিশেষ প্রয়োজনটা কী? আমরা আগেই আলোচনা করেছি, যদি স্ত্রীর মধ্যে অশালীন, আপত্তিকর কোনো কিছু দেখা যায়, তবে প্রথমে তাকে বোঝাতে হবে। যদি তার বোধোদয় না ঘটে, তখন বিছানা আলাদা করার অবকাশ আছে। স্বামী ও স্ত্রী আলাদা বিছানায় শোবে। বিছানা বর্জনের অর্থ তাদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া নয় কিংবা নিজে ঘর থেকে চলে যাওয়াও উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হলো ঘরের ভেতরেই উভয়ে পৃথক বিছানায় ঘুমাবে। আর এটা বলা হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদেই। স্ত্রীর মানসিকতায় যেন পরিবর্তন আসে এবং সে মার্জিত জীবনযাপনের গুরুত্ব অনুভব করে।

সর্বাত্মক বয়কট নয় : আলেমরা বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে স্বামী পৃথক বিছানা গ্রহণ করলেও তার সঙ্গে পুরোপুরি কথা বন্ধ রাখা বা সর্বাত্মক বয়কট করা যাবে না; বরং তারা পরস্পরের সঙ্গে সালাম বিনিময় করবে এবং প্রয়োজনীয় কথা বলবে। পুরোপুরি কথা বন্ধ করা বৈধ হবে না।

স্বামী কত দিন দূরে থাকতে পারবে : ইসলামী আইনজ্ঞ আলেমরা বলেন, স্বামী যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য সফরে যেতে চান, তবে স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ করবে। খুশি মনে অনুমতি দিলে সফর বৈধ হবে, অন্যথায় নয়। ওমর (রা.) তাঁর শাসনামলে এই আইন চালু করেছিলেন যে যেসব যোদ্ধা বাড়ির বাইরে থাকেন, তাঁরা চার মাসের বেশি বাইরে থাকতে পারবেন না।

স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া হজও নয় : আলেমরা আরো বলেন, কেউ যদি চার মাসের কম সময়ের জন্য সফরে বের হয়, তবে তার জন্য স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু চার মাসের বেশি সময়ের জন্য সফরে বের হলে অবশ্যই স্ত্রীর অনুমতি লাগবে। সফর যত বরকতপূর্ণই হোক না কেন। এমনকি যদি হজের সফরও হয় আর তা যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য হয়, তবে স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন হবে। দাওয়াত, তাবলিগ ও জিহাদের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য হবে।

প্রবাসীদেরও লাগবে স্ত্রীর অনুমতি : যখন এমন গুরুত্বপূর্ণ বিধানের ক্ষেত্রেও স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন হয়, তখন চাকরিবাকরি বা নিছক অর্থ উপার্জনের জন্য স্বামী যদি দূরে থাকে বা দেশের বাইরে থাকে, তবে তার বিধান কী হবে? এমনটি করা স্ত্রীর অধিকার নষ্ট করার শামিল, যা ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ ও গুনাহ।

স্ত্রীর অনুমতি গুরুত্বপূর্ণ কেন? : ইসলাম স্ত্রীর ওপর স্বামীর অভিভাবকতুল্য কর্তৃত্ব দিয়েছে। তবে স্বামীর ব্যাপারে স্ত্রীর সন্তুষ্টি ও মূল্যায়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন হিসেবে তার ঈমানই সবচেয়ে বেশি পরিপূর্ণ, যার চরিত্র সবচেয়ে ভালো। আর তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সবচেয়ে চরিত্রবান যে তার স্ত্রীর চোখে চরিত্রবান। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১১৬২)। উল্লিখিত হাদিস থেকে বোঝা যায়, স্বামীর চরিত্র বিচারে স্ত্রীর মূল্যায়ন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন

ইসলাহি খুতুবাত থেকে

মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles