
পরকীয়ার অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মালদহের এক নারীকে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে ঘর থেকে বের করে চুল কেটে দেওয়া দিয়েছে। দাম্পত্য সম্পর্কে ‘বিশ্বাসঘাতক’কে চিহ্নিত করতে ওই নারীর কপালে লিখে দেওয়া হলো ‘৪২০’। এরপর ওই তাকে গ্রামছাড়াও করা হয়েছে। আজ রোববার এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, মালদহের চাঁচলের ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাণ্ডরণ বেদে পাড়ার বাসিন্দা কাজলী বেদে। বছর দুই আগে তার স্বামী মারা গেছেন। এরপর থেকে ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন কাজলী। কিন্তু গত কয়েক মাসে তাঁর চাল-চলনে বদল আসে বলে অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। তাদের অভিযোগ, গ্রামের একাধিক পুরুষের সঙ্গে কাজলীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। মাঝেমধ্যেই নাকি কাজলী রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন।
কাজলীর এ কর্মকাণ্ডের কথা তার শাশুড়ি প্রতিবেশীদের জানান। এরপর গ্রামে একটি সালিশ ডাকা হয়। সেখানে কাজলীকে ‘দুশ্চরিত্র’ বলে অপবাদ হয়। এ ছাড়া তিনি বাড়ি থেকে কোথাও না বের হতে পারবেন না- এমন নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। কিন্তু কাজলী তা মানতে চাননি। পরে ফের বাড়ির বাইরে গেলে, গ্রামবাসীরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। তারপরই তাকে মারধর করে চুল কেটে দেওয়া হয়। এখানেই থেমে থাকেনি নির্যাতনকারীরা। কাজলীর কপালে ‘৪২০’ লিখে দেওয়া হয়েছে।
আজ এই নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। এতে দেখা যায়, সবুজ জামা পরা এক যুবক পেছন থেকে ধরে রয়েছেন কাজলীকে। আর এক নারী তার চুল কেটে কপালে খোদাই করছে ‘৪২০’।
এ ঘটনায় তুমুল সমালোচনা চলছে। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা এর প্রতিবাদ করছেন। ভারতের মহিলা কমিশনও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ‘মধ্যযুগীয় বর্বরতা’র সঙ্গে তুলনা করেছে। যদিও এ বিষয়ে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি।