
টরন্টোর সিটি কাউন্সিল নয়টি নতুন মুখ পাচ্ছে। এর মধ্যে হিজাব পরিহিত প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিলর হিসেবে আসমা মালিককেও পাচ্ছে সিটি কাউন্সিল।
আসমা মালিক সিপি২৪কে বলেন, সমগ্র সিটির ফলাফল যদি দেখেন তাহলে দেখবেন, এটা দারুণ ব্যাপার। প্রগতিশীল নেতৃত্বের মুখটাই আমরা কেবল পরিবর্তন করছি না, মূল বিষয়গুলোও বদলে দিচ্ছি।
৩৮ বছর বয়সী মালিক সোমবার রাতের নির্বাচনে ডাউনটাউন ওয়ার্ড ১০-স্প্যাডিনা-ফোর্ট ইয়র্ক থেকে ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে কাউন্সিল হিসেবে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১৫ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
টরন্টোর ডাউনটাউনের দক্ষিণাঞ্চলের কেন্দ্রীয় অংশ নিয়ে গঠিত ঘনবসতিপূর্ণ ওয়ার্ডটি পশ্চিমে ডাফেরিন স্ট্রিট থেকে পূর্বে ডন ভ্যালি পার্কওয়ে পর্যন্ত বিস্তৃত। ওয়ার্ডটির জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৫১০ জন।
ওয়ার্ডটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মালিকসহ মোট ১১ জন প্রার্থী। তাদের ২১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন এপ্রিল এঙ্গেলবার্গ। ২০১৮ সালের মিউনিসিপাল নির্বাচনেও সাবেক কাউন্সিলর জো ক্রেসির কাছে হেরে দ্বিতীয় হয়েছিলেন এঙ্গেলবার্গ। প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৪ সালে। বহুদিনের লালিত জর্জ ব্রাউন কলেজের চাকরির জন্য এপ্রিলে কাউন্সিলরের দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি।
রাজনৈতিক পরিমন্ডলে মালিকের ইতিহাস তৈরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ওয়ার্ড ১০-ট্রিনিটি-প্যাডিনার হয়ে টরন্টো ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ডে ট্রাস্টির দায়িত্ব পালন করেন। সেবারও তিনিই ছিলেন কানাডার কোনো সরকারি অফিসে হিজাব পরিহিত প্রথম মুসলিম নারী কর্মকর্তা।
আরও প্রতিনিধি ও মিউনিসিপাল রাজনীতিতে আরও অন্তর্ভুক্তির পথ করে দেওয়ায় সহায়তা করতে পারায় তিনি গর্বিত বলে জানান আসমা মালিক। তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ও নতুন প্রজন্মের নেতা, কমিউনিটির অধিকার কর্মীদের কথা ভেবে আমি আশান্বিত। আমাদের নগরীর রাজনৈতিক নেতৃত্বে তারা নিজেদের একটা অবস্থান দেখতে পাবেন।
মালিকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ দশক আগে তার বাবা-মা পাকিস্তান থেকে কানাডায় অভিবাসন করেন এবং তার ভাই-বোনেরা টরন্টোতে বেড়ে ওঠেন। মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের একজন কর্মী আসমা মালিক ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো থেকে গ্র্যাজুয়েট করেন এবং নীতি প্রণয়ন, যোগযোগ ও কমিউনিটি সংগঠনের ইতিহাস আছে তার।
কাউন্সিলর পদে প্রচারণার আগে তিনি ডিরেক্টর অব আডভোকেসি এবং অলাভজনক সংস্থা অরগানাইজিং ফর দ্য অ্যাটকিনসন ফাউন্ডেশনে কাজ করেন। অন্টারিওতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করে থাকে তারা। প্রচারণার কাজে সময় দিতে জুলাই মাসে অবেতন ছুটি নেন মালিক।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর হিসেবে তার অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হবে আধিক সংখ্যক রেন্টাল ও অলাভজনক বাড়ি নির্মাণ ও কঠোরভাবে ভাড়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সাশ্রয়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সাশ্রয়ে উন্নত মানের ট্রানজিট সেবা, আরও বেশি পাবলিক পার্ক এবং নিরাপদ নেবারহড ও সড়ক নিশ্চিত করাও তার অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। বাড়ির দাম ও ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে লোকজন ও পরিবার আমাদের শহর থেকে বেরিয়ে যাবে এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো মীমাংসা করার জন সিটি কাউন্সিলের টেবিলে যোগ্য নেতৃত্ব আনা প্রয়োজন।