8.9 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর?

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর? - the Bengali Times
ধনকুবের স্বামীর সঙ্গে মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ

ছাব্বিশ বছর বয়েসে কেরিয়ার যখন তুঙ্গে, সেই সময়েই বিয়ে করেছিলেন ৮৯ বছরের এক ধনকুবেরকে। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর জানতে পারলেন, সম্পত্তির দলিলে তার নামে কিছুই নেই। এ নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরেও স্বামীর সম্পত্তির কিছুই পাননি ‘প্লেবয়’ পত্রিকার মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ।

মাত্র ৩৯ বছর বয়সে ২০০৭ সালে মারা গিয়েছিলেন আনা নিকোল। হলিউডের একটি নামী হোটেলে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আনার রক্তে ৮ থেকে ১১ ধরনের মাদক আলামত পাওয়া গিয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়ায়।

- Advertisement -
৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর? - the Bengali Times
৮৯ বছরের এক ধনকুবের স্বামীর সঙ্গে মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ

পরে অবশ্য জানা যায়, অতিরিক্ত মাদকসেবনেই আনা নিকোল স্মিথের মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশি রিপোর্টে এ তথ্য উঠে আসে। তবে আনার মৃত্যুর থেকেও তার ‘রঙিন জীবন নজর কেড়েছিল সবার।

১৯৮৫ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে আনার। পরের বছর মা হন। বিলি স্মিথের সঙ্গে সে বিয়েটা অবশ্য ভেঙে যায় ১৯৯৩ সালে এসে। এর আগে থেকেই মডেলিংয়ের দুনিয়ার পা রেখেছিলেন তিনি। ৯২-এ ‘প্লেবয়’ পত্রিকার প্রচ্ছদে জায়গা করে নেন এই মডেল। আনাকে লেন্সবন্দি করেছিলেন ‘প্লেবয়’ পত্রিকার খ্যাতনামী চিত্রগ্রাহক স্টিফেন ওয়েডা। সেসব ছবিতে তুমুল জোয়ার ওঠে আনার ক্যারিয়ারে। সেবার ‘প্লেবয় প্লেমেট’ হিসাবে আনার ছবিতে ভরে উঠেছিল পত্রিকাটি।

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর? - the Bengali Times
মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ

পত্রিকার হয়ে মডেলিংয়ের আগে অবশ্য কষ্টের দিন দেখতে হয়েছে আনাকে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ওয়ালমার্টসহ আমেরিকার বেশ কয়েকটি বিপণিতে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তবে সে রোজগারে কুলিয়ে উঠতে পারতেন না। বাধ্য হয়েই হিউস্টনের একটি স্ট্রিপ ক্লাবে ঢুকে পড়েন। অচেনা মানুষজনের সামনে নগ্ন হতে হত আনাকে। হিউস্টনের ওই ক্লাবেই এক ধনকুবেরের নজরে পড়েন তিনি। স্ট্রিপ ক্লাবের কাজের সময় থেকেই দ্বিতীয় জে হাওয়ার্ড মার্শালের সঙ্গে প্রেমের শুরু।

আনার প্রেমে পাগল মার্শাল তাকে আর্থিকভাবেও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় থেকেই আনার ক্যারিয়ারের রেখা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। সেসব মার্শালের অর্থে নাকি আনার দক্ষতায়, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একে একে ‘প্লেবয়’ পত্রিকার প্রচ্ছদেও তার ছবি প্রকাশিত হয়। এরপর ‘গেস’ বা ‘এইচ অ্যান্ড এম’ এর মতো নামী ব্যান্ডের মডেল হিসাবে দেখা যায় আনাকে।

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর? - the Bengali Times
মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ

মডেলিং জগতে নামডাক হওয়ার পরে হলিউডে পা রাখেন আনা। লেসলি নেলসনের ‘নেকেড গান’ সিরিজের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। লেসলির সঙ্গে ‘নেকেড গান ৩৩ অ্যান্ড ওয়ান থার্ড’ ছবিতে তানিয়ার ভূমিকায় মুখ দেখালেও হলিউডে বিশেষ দাগ কাটতে পারেননি আনা। তবে তাতে তার খ্যাতিতে ভাটা পড়েনি।

কেরিয়ারের তুঙ্গে থাকাকালীন মার্শালের সঙ্গে বিয়েটা সেরে ফেলেন আনা। সেই সময় মার্শালের বয়স ৮৯ আর আনার ২৬। তবে কি মার্শালের নয়, তার ‘সম্পদের খনি’র প্রেমে পড়েছিলেন আনা? অনেকেই অনেক কথা বলতে শুরু করেন। যদিও এসব কথায় কান দেননি আনা। ৯৪-এ বিয়ে সেরে ফেলার পর তার দাবি ছিল, এমনভাবে কারও কাছ থেকে ভালবাসা পাননি তিনি। তাই মার্শালকে বিয়ে করেছিলেন।

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে তরুণী মডেলের বিয়ে, কী হলো এরপর? - the Bengali Times
মডেল ও অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ

মার্শালের সঙ্গে তার বিয়ের কারণ নিয়ে জল্পনার অন্ত ছিল না। ২০০২ সালে আমেরিকার টেলিভিশনে ‘ল্যারি কিং লাইভ’ শোয়ে আনার মন্তব্য ছিল, ‘ছেলে (ড্যানিয়েল ওয়েন স্মিথ) আর আমার জন্য এত কিছু করেছে… সেজন্যই এতো ভালবাসতাম। এরকম ভালবাসা আমি আর কারও কাছ থেকে পাইনি। কেউ আমাকে এতটা ভালবাসা দেয়নি, এত সম্মানও করেনি। লোকে আমার সম্পর্কে যা-ই বলুক না কেন, পরোয়া করি না।’

মার্শালের সঙ্গে আনার দাম্পত্য টিকেছিল মাত্র ১৩ মাস। ৯৫-এ মৃত্যু হয় নবতিপর মার্শালের। স্বামীর মৃত্যুর পর অবশ্য ‘অন্য আঘাত’ পান আনা। জানতে পারেন, নিজের দলিলে তার নামে কিছুই লিখে যাননি মার্শাল। তার কোটি কোটি ডলারের সম্পত্তির দখল পেতে এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন আনা। আইনি লড়াইয়ের মাঝেই আনার প্রথম সন্তান ড্যানিয়েলের মৃত্যু হয়। আইনি খরচ সামলাতে রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান ‘দি আনা নিকোল শো’ শুরু করেছিলেন তিনি।

২০০৬ সালে এক কন্যাসন্তানের জন্মও দিয়েছিলেন আনা, যা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। অনেকেই ওই সন্তানের পিতৃত্ব দাবি করেন। ডিএনএ পরীক্ষার পর ল্যারি বার্কহেড নামে এক চিত্রগ্রাহকের পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়। প্রথম সন্তানের মৃত্যুশোক নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মাঝেই নিজের শর্তে বেঁচেছিলেন আনা। সঙ্গে মাদকাসক্তও হয়ে পড়ছিলেন। সেই আসক্তিই তাকে জীবনের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল।

সূত্র: আনন্দবাজার

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles