
আমার এক কলিগ খুব “ঘাউড়া” কিছিমের। তাকে একটু যাতা দেয়ার জন্য বসের কাছে গিয়ে তার সম্পর্কে রাগ ঝাড়তে লাগলাম।
বস বলল, তুমি আমাকে যা বলছো, সেগুলো নিয়ে কী তার সাথে কথা বলেছো?
আমি বললাম, না।
বস বলল, আমার মনে হয় তার সাথে আগে তোমার কথা বলা দরকার। তাতে কাজ না হলে তারপর আমাকে বলিও।
বসের কথা শুনে একটু ধাক্কা খেলাম।
“ঘাউড়া” কলিগকে আর যাতা দেয়া হলনা। তার পরিবের্ত নিজেই যাতা খেলাম।
পরে বুঝলাম আসলেই তো। যার আচরনকে সমস্যা মনে করছি তার সাথে কথা না বলে আরেকজনকে কেন বলতে গেলাম।
বস আবার প্রশ্ন করল, আমাকে বলার আগে এ বিষয়টা নিয়ে আরো কী কারো সাথে কথা বলেছো?
আমি বললাম, হ, আরো দুই তিনজনের সাথে।
মানে সত্যটাই বললাম।
বস বলল, কাজটা বোধ হয় ঠিক হয়নি। এতে তো সমস্যার সমাধান হবেনা। দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে। যার আচরন তোমার সমস্যা তার সাথে কথা না বলে, তার সম্পর্কে অন্যের সাথে কথা বলার অর্থই হল সমস্যার সমাধান হওয়া তো দূরের কথা বরং দ্বন্দ্বকে আরো উসকিয়ে দেয়া। এর ফলে যা হবে তা হল, একজন আরেকজনকে দোষারোপ করতে থাকবে। ওর কথা তার কানে লাগাবে। এভাবে চলতে থাকবে এবং এক সময় পরিস্থিতি গরম হয়ে মারামারি কাটাকাটি লেগে যেতে পারে। তখন আর সামাল দেয়া সম্ভব হবেনা।
বস “কনফ্লিক্ট রেজুলেসনের” ওপর লেকচার দিতে লাগলেন। আমি কিছুটা বিরক্ত।
আমি বললাম, ঠিকাছে বস। আমি এখুনি গিয়ে তার সাথে কথা বলবো। ফলাফল তোমাকে শীঘ্রই জানাচ্ছি।
একটু অপ্রস্তুুত হয়েই “ঘাউড়া” কলিগকে গিয়ে বললাম, তোমার সাথে আমি কী একটু কথা বলতে পারি।
সে বলল, অবশ্যই। এখনই বলতে চাও?
আমি বললাম, তুমি চাইলে এখনই।
তারপর আর কী। কথা শুরু করলাম। সেদিন তুমি এভাবে কথা বলেছো, আমি কষ্ট পেয়েছি…
এভাবে আধা ঘন্টার মত কথা হল। সেও বলতে লাগল…
তার কথায় তার আচরনের উদ্দেশ্য –মানে যে আচেরন আমাকে হার্ট করেছে— যার জন্য আমি তাকে ঘাউড়া বলছি , তার ব্যাক ষ্টোরি— সব শুনলাম। তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার কথাও বললাম। সে তার জন্য খুব দু:খ প্রকাশ করল।
ওর প্রতি আমার ধারনাই পাল্টো গেল।
পরের দিন বসকে বললাম, বস আমাদের মিটে গেছে। তোমাকে ধন্যবাদ।
বস বলল, আমাকে বাঁচালে। তোমাকেও ধন্যবাদ।
টরন্টো, কানাডা