9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

কারাগারে সেলাই, বুটিক শাখা ও পারলারে কাজ করছেন সেই পাপিয়া

কারাগারে সেলাই, বুটিক শাখা ও পারলারে কাজ করছেন সেই পাপিয়া - the Bengali Times
শামীমা নূর পাপিয়া ফাইল ছবি

শামীমা নূর পাপিয়া। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক। বিদেশে পালানোর সময় গ্রেপ্তারের পরই আলোচনা-সমালোচনায় আসেন তিনি। অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পাপিয়া এখন আছেন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে। কয়েদি হিসেবে তিনি কারাগারের সেলাই, বুটিক শাখা ও পারলারে কাজ করছেন। তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। কারাগার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দেশ থেকে পালানোর সময় ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ মার্কিন ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়। পরদিন পাপিয়ার ফার্মগেটের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন, গুলি, বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়। অভিযান চালানো হয় পাপিয়ার নরসিংদীর বাড়িতেও।

- Advertisement -

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে অস্ত্র আইনের মামলার দুটি ধারায় তাঁদের প্রত্যেককে ২৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে দুটি ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে তাঁদের ২০ বছর কারাভোগ করতে হবে। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর এই মামলার রায় দেওয়া হয়।

কারাগার সূত্র জানায়, অস্ত্র মামলায় সাজার পর পাপিয়া ও মফিজুর দম্পতির কয়েদি জীবন শুরু হয়। পাপিয়া কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আর তাঁর স্বামী হাইসিকিউরিটি কারাগারে সাজা খাটছেন। তাঁর কয়েদি নম্বর ২০২২/এ। পাপিয়া সেলাই ও বুটিক শাখার পাশাপাশি পার্লারেও কাজ করছেন।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেলার ওবায়দুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি পাপিয়াকে কারাগারের বিধি অনুযায়ী কাপড় সেলাই ও বুটিক শাখায় কাজ দেওয়া হয়েছে। গত পরশু তাঁর ফাইল দেখে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুর রহমান বলেন, তাঁর স্বামীও কাশিমপুর কারাগারে আছেন। কারাগারে তাঁদের সরাসরি দেখা করার সুযোগ নেই। তবে কারাবিধি অনুযায়ী চিঠি ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

একসময় গুলশানের পাঁচ তারকা একটি হোটেলে প্রেসিডেন্ট স্যুইটে আয়েশি জীবন কাটিয়েছেন পাপিয়া। একটি মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই হোটেলের ২৬টি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়েছেন পাপিয়া। হোটেলটির বারে প্রতিদিন বিল দিতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। ধরা পড়ার আগে হোটেলে ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা বিল পরিশোধের তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মফিজুর-পাপিয়া দম্পতি তেজগাঁওয়ে কার এক্সচেঞ্জ নামের প্রতিষ্ঠানে কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। নরসিংদীতে কেএমসি এন্টারপ্রাইজ ও কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড সলিউশন নামের প্রতিষ্ঠানে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। পাপিয়া সংগঠনের পদ-বাণিজ্য, তদবির-বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। তাঁর অন্যতম সহযোগী ছিলেন স্বামী মফিজুর। দুজনে মিলে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছেন।

গ্রেপ্তারের পরদিন ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও মফিজুরের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে দুটি এবং জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় সাজা হলেও বাকি দুটি মামলা বিচারাধীন। মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে করা মামলাটিও বিচারাধীন। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় পাপিয়া দম্পতির সঙ্গে গ্রেপ্তার দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়িবা নূরকেও আসামি করা হয়েছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles