
যে কোন জীবন শুরু হয় পানি দিয়ে। শেষও হয় পানিতে। পানি জীবন, মৃত্যু, অন্ধকার ও আলোর মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে। পানি ছাড়া বাঁচার উপায় নেই। পৃথিবীর সিংহভাগই পানি। আমাদের শরীরেও পানিরই আধিক্য।
আজকে বাসার কাছেই একটি সিনেপ্লেক্সে ছোট কন্যাকে নিয়ে “অভোতার- দ্য ওয়ে অব ওয়াটার” মুভিখানা দেখলাম। বহুদিন পরে সিনেমা হলে গিয়ে মুভি দেখা। খুব ভালো লাগল। ক্যামেরন খুব চমৎকারভাবে মুভিটি বানিয়েছেন। অবশ্য উনি সব সময়ই তা করেন। ২০০৯ সালের অভোতারের চেয়ে ২০২২সালের অভোতার আমার কাছে ভাল লাগল।
কারনটা হয়ত আমার পানি পছন্দ। প্রকৃতি পছন্দ করি। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা পানির কাছে। পানির কাছে থাকতে এখনো ভালো লাগে।
টাইটানিক, অভোতার, টার্মিনেটর খ্যাত ক্যানাডিয়ান ফিল্মমেকার জেমস্ ক্যামেরন এ পর্যন্ত মোট পাঁচবার বিয়ে করেছেন। আর মুভি বানিয়েছেন এগারটার মত। “অভোতার-দ্য ওয়ে অব ওয়াটার”ও জেমস ক্যামেরনের লেটেষ্ট মুভি।
আমার ধারনা উনি এ মুভিতেও অস্কার পাবেন।
বাংলাদেশের চিত্রনায়িকা পরিমনিও এ পর্যন্ত পাঁচবার বিয়ে করেছেন। পরিমনি ভালো অভিনয় করেন, নাচগান করেন আবার সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পরিমনি বাংলাদেশে বিখ্যাত। পরিমনি অভিনীত একটা মুভিও আমার দেখা হয়নি। তবে ওনার রিয়েল লাইফের যে মুভিগুলো উনি দেখান তা দেখতে ভালোই লাগে। মুভি তো জীবনকে ঘিরেই তৈরী হয়। পরিমনির বয়স কম, কিন্তুু জেমস ক্যামেরনের বয়স ৭০ এর উপরে।
জেমস্ ক্যামেরুন চিত্রনাট্য লেখে, ভিজুয়াল ইফেক্ট থেকে শুরু করে ফিল্ম বানাতে যা যা লাগে সবই পারে। শুধু অভিনয় করতে পারেনা।
ক্যামেরনের জন্ম কানাডার অন্টারিওতে। নায়াগারা হাইস্কুলে পড়াশোনাও করেছেন। তারপর তার পরিবার ক্যালিফোরনিয়াতে চলে যায়। সেখানে তিনি ফুলারটন নামে একটি কমিউনিটি কলেজে কিছুদিন পড়েছেন। পড়াশোনা ছেড়েছুঁড়ে ট্রাক চালানো শুরু করেন। কিছুদিন পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবেও কাজ করেন। কিন্তুু অবসর সময়ে লেখালিখি করতেন। এই সময়ে সে স্পেশাল ইফেক্ট শিখতে শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দিকে ঝুঁকে পরেন।
এ পর্যন্ত এগারটি ফিল্মে ডিরেকশন দিয়েছেন। প্রায় সবগুলোই বক্স অফিস মাতিয়েছে। অভোতার-৩ ও অভোতার-৪ তৈরী হচ্ছে ২০২৪ ও ২০২৬সালে রিলিজ হবে।
ক্যামরন তার মুভির মাধ্যমে প্রকৃতি, মানবতা ও বৃদ্ধিবৃত্তিক মেশিন–এই তিন বিষয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বের করার চেষ্টা করেন। তার দৃষ্টিতে টেকনোলজি মানুষের উপকারের চেয়ে অপকারই বেশী করছে। টেকনোলজি মানবতা ও প্রকৃতির শক্র। তিনি মনে করেন আদিবাসীরা আমাদের মত তথাকথিত সভ্য মানুষের চেয়ে বেশী সৎ ও মানবিক।
‘অভোতার–দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ মুভিতে তার সেই মনোভাবের প্রকৃত প্রতিফলন রয়েছে। আমার মনে হয় সব বাচ্চাদেরকে মুভিটি দেখানো উচিৎ। কারন এখনকার বাচ্চারাই আমাদের এই পৃথিবীকে কর্পোরেট আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে পারবে।
নোট: জেমস্ ক্যামেরন ও পরিমনির বিয়ের প্রসঙ্গটা আপনাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিত মনে হতে পারে। কিন্তুু ওটা কেন আনলাম আমি নিজেও জানিনা।
স্কারবোরো, কানাডা