9.5 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

শ্রদ্ধাকে হত্যার পর চিকেন রোল অর্ডার দেন আফতাব

শ্রদ্ধাকে হত্যার পর চিকেন রোল অর্ডার দেন আফতাব - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

ভারতের আলোচিত সেই শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের রেশ থামছেই না। প্রায়শই দেশটির পুলিশ নতুন তথ্য হাজির করেছে। দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের সেই নৃশংস বিবরণ এবার উঠে এসেছে পুলিশের চার্জশিটে।

লিভ ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে কীভাবে খুন করেছিলেন প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা- সেই কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬০০ পাতার চার্জশিটে। সেখানে বলা হয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর চিকেন রোল খেয়েছিলেন আফতাব। প্রেমিকার রক্ত সাফ করেছিলেন হারপিক দিয়ে।

- Advertisement -

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের পালঘরের তরুণী শ্রদ্ধার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আফতাবের। সেই আলাপ পরবর্তীতে প্রেমে গড়ায়। বাড়ির অমতেই আফতাবকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন শ্রদ্ধা। যার জন্য আপনজনদের ছেড়েছেন, সেই আফতাবের হাতেই খুন হতে হয় শ্রদ্ধাকে। ২০২২ সালের ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করেন তার প্রেমিক। তবে এই হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসে গত বছরের নভেম্বর মাসে। শ্রদ্ধার নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বাবা বিকাশ ওয়ালকর। ঘটনার তদন্তে নেমেই পর্দাফাঁস করে পুলিশ।

শ্রদ্ধাকে খুনের পর তার দেহ ৩৫ টুকরো করেন আফতাব। এই নৃশংস হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আফতাবকে।

শ্রদ্ধাকাণ্ডে ৬ হাজার ৬০০ পাতার চার্জশিট তৈরি করেছে দিল্লি পুলিশ। কীভাবে প্রেমিকাকে খুন করেছিলেন আফতাব? তা-ই তুলে ধরা হয়েছে। দিল্লির ছতরপুরে যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন শ্রদ্ধা এবং আফতাব, গত বছরের ১৮ মে সেখানেই খুন করা হয় শ্রদ্ধাকে। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রদ্ধাকে জাপটে ধরে প্রথমে মেঝেতে ফেলে দেন আফতাব। শ্রদ্ধার বুকের উপর চড়ে বসেন তিনি। তার পর দু’হাত দিয়ে শ্রদ্ধার গলা চেপে ধরেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শ্রদ্ধার দেহ শৌচাগারে লুকিয়ে রাখেন আফতাব।

পুলিশকে আফতাব জানিয়েছেন, শ্রদ্ধাকে খুনের পর সেদিন সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে বাড়ির সদর দরজা বন্ধ করে কাছাকাছি একটি দোকানে যান। সেখান থেকে ১টি করাত, ৩টি ব্লেড, ১টি হাতুড়ি এবং প্লাস্টিকের ক্লিপ কেনেন। এর পর বাড়ি ফিরে প্রথমে করাত দিয়ে শ্রদ্ধার হাত কাটেন আফতাব। তারপর সেই দেহাংশ সাদা পলিথিনের মধ্যে ভরে রাখেন। শ্রদ্ধার হাত কাটতে গিয়ে চোট পান আফতাব। তার বাঁ হাতে সামান্য কেটে যায়। শ্রদ্ধার কাটা হাত রান্নাঘরের ক্যাবিনেটে লুকিয়ে রাখেন। খুনের পরের রাতে ২টো নাগাদ শ্রদ্ধার উরু কেটে ছতরপুরের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসেন আফতাব।

এর ৪-৫ দিন পর শ্রদ্ধার দেহের ১৭টি টুকরো করেন আফতাব। যার মধ্যে ছিল হাতের ৬ টুকরো, পায়ের ৬ টুকরো, মাথা, ধড়, কোমরের ২টি টুকরো, বুড়ো আঙুল। দিল্লি পুলিশকে আফতাব জানিয়েছেন, খুনের পরের দিন, অর্থাৎ গত ১৯ মে একটি ফ্রিজ কেনেন আফতাব। শ্রদ্ধার বাকি দেহাংশগুলি ওই ফ্রিজে রাখেন। শ্রদ্ধাকে খুনের পর একটি ডেটিং সাইটে অন্য এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন আফতাব। ওই নারী আফতাবের ফ্ল্যাটে এসে বেশ কয়েক বার রাতও কাটান। যখনই ওই নারী ফ্ল্যাটে যেতেন, সেই সময় ফ্রিজ পরিষ্কার করে রাখতেন আফতাব। সেইসঙ্গে শ্রদ্ধার দেহাংশ রান্নাঘরে লুকিয়ে রাখতেন। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার হাড়গোড় মিক্সার গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো গুঁড়োও করেছিলেন আফতাব।

শ্রদ্ধাকে খুনের ঘটনায় তাকে যাতে কেউ সন্দেহ না করেন, এ জন্য ফন্দিও এঁটেছিলেন আফতাব। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রদ্ধার নিখোঁজের তদন্তে যোগ দিতে মহারাষ্ট্রও যায় আফতাব। পথে শ্রদ্ধার ফোন ছুড়ে দেন। পাশাপাশি শ্রদ্ধার ক্রেডিট কার্ড নষ্ট করে দেন। শ্রদ্ধার ঠোঁটের গোড়ায় ‘স্টাড’ (পিয়ার্সিং করা ছিল) ছিল। সেই ‘স্টাড’টি বাক্সের মধ্যে ভরে তা চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে দেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles