
দক্ষিণ ভারতের ছবি ‘রাজনীতি’ দেখলাম। ‘রাইট টু রিকল’ বিষয়টা সামনে আনা হয়েছে। অর্থাৎ একজন জনপ্রতিনিধিকে পাঁচ বছরের জন্যে নির্বাচিত করা হলেও কিছুদিন পরে যদি দেখা যায় সেই জনপ্রতিনিধি জনগণের আশা আকাংখা পূরণ করতে পারছে না বা যে উদ্দেশ্যে মানুষ ভোট দিয়েছিল তিনি তার উল্টো কাজ করে চলেছেন, তাহলে সেই এলাকার ভোটারেরা ‘রাইট টু রিকল’ আইনের কারণে সেই জনপ্রতিনিধিকে রিকল করতে পারেন। মানে হলো একটা নির্দিষ্ট সংখক জনগণ স্বাক্ষর করে পুনরায় একটা ভোটের দাবী করতে পারেন যেখানে অন্য কোন প্রার্থী থাকবে না, মানুষ শুধু ভোট দিয়ে জানিয়ে দিবে যে তারা ঐ জনপ্রতিনিধিকে আর চায় কি না! বেশীরভাগ ভোটার যদি ভোট দেয় যে তারা আর এই লোকটাকে চায় না, তাহলে পাঁচ বছরের নির্বাচিত হলেও বাকী বছরগুলি তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তখন তিন মাসের মধ্যে নুতন নির্বাচনের ব্যবস্হা করতে হবে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্হা যেখানে কায়েম আছে সেখানে এটি একটি চমৎকার আইন যাতে মানুষের অধিকার প্রতিটি মুহুর্তের জন্যে সুরক্ষিত থাকে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে কিছুদিন আগে রিকল ভোট আহবান করা হয় সেখানকার নির্বাচিত গভর্নরের বিরুদ্ধে। কিন্তু দেখা যায় সেই রিকল ভোটে বেশীরভাগ মানুষ ঐ গভর্নরের পক্ষেই ভোট দেয় ফলে তিনি বাকী টার্মের জন্যে টিকে যান। এতে বরং ঐ গভর্নরের নিজের কাজের প্রতি আস্হা বেড়ে যায়।
ঐ ছবিটিতে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে তা হলো মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখে ভাইরাল হয়ে গেলে ছেলেটি ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়। কিন্তু পুলিশ তাকে খুঁজে বের করে সিএমের কাছে নিয়ে যায় এবং সিএম তাকে শাস্তি না দিয়ে বরং তার মেধাকে পজিটিভলি কাজে লাগায়।
আরো ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো এই বিল সংসদে আনার কারণে অধিকাংশ এমপি এই সিএমের বিপক্ষে চলে যায় এবং সিএম ক্ষমতাচ্যুত হন। কিন্তু কয়েক বছর পরে তিনি ঠিকই আবার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসেন।
তবে কোন স্বৈরতান্ত্রিক বা রাজতান্ত্রিক সমাজে এসব প্রযোজ্য নয়। কারণ তারা জনগণের রিকল ভোটতো দুরের কথা আসল ভোটেরই তোয়াক্কা করে না। ফেসবুকে লিখলে অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়।
যাহোক গনতন্ত্র হলো একটি স্রোতস্বিনী নদীর মত। যেখানে কোন আবর্জনা জমে থাকতে পারে না।
ছবিটি দেখার জন্যে সবাইকে আহবান জানাই। কারণ ছবিটি দেখলে আমার মত আপনারও হয়তো আবার রাজনীতিতে ফিরে আসতে মন চাইবে।
স্কারবোরো, কানাডা