16.1 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

‘আগে আমি বাঁচি, পরে তোদের বাঁচাব’

‘আগে আমি বাঁচি, পরে তোদের বাঁচাব’ - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে ১ মার্চ দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে হল কর্তৃপক্ষের জরুরি সভাশেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় হল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।

- Advertisement -

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. আহসানুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহসানুল হক বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে হল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন— শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। অন্তরা বাদে সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এদিকে অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা মূলহোতা ছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিযুক্ত বলেন, ‘১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা আমাদের ভয় দেখিয়ে বলে প্রত্যেকে এক ঘণ্টা করে ফুলপরীকে রুমে ডেকে র্যাগ দিবি, যা ইচ্ছা তাই করবি। যত কিছু হবে সব আমি দেখব।’

আমরা উনাকে বলি— এগুলো করা তো ঠিক হবে না আপু। পরে উনি আমাদের বড় বড় চোখ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে তিনি বলেন, যা বলছি তাই কর। দরকার হলে ফুলপরীকে মেরে ফেলবি, আমি লাশ গুম করে দেব। এর পরে কিছু হলে আমি একাই দেখব, তোদের কিছু ভাবতে হবে না।’

অভিযুক্তরা আরও জানান, ঘটনার পর অন্তরা আপু আমাদের বলেন— বাইরের কাউকে কিছু জানাবি না। পরে উনি জোরপূর্বক আমাদের মোবাইল থেকে কল লিস্ট ও মেসেজ সব ডিলিট করে দেন।

এদিকে তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকারে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত অন্য সহযোগীদের অন্তরা বলেছিলেন— ‘আগে আমি বাঁচি, পরে তোদের বাঁচাব’।

প্রসঙ্গত, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে রাতভর র্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ ওঠে।

এতে শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগকর্মী তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মীম ও হালিমা খাতুন উর্মীসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

পরে তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ ছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।

হাইকোর্টের নির্দেশে ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর হল ছেড়ে চলে যায় অভিযুক্ত সানজিদা ও তাবাসসুম।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles