ব্যক্তিগত সহকারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রহমান খানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক আবদুস সালাম খান আসামির জামিন আবেদন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বেঞ্চ সহকারী মো. রুবেল খান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী। পরে এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন সাবেক উপাচার্য। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আজ তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক জামিন আবেদন বাতিল করে দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠাগারে নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী ২০২১ সালে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোরকিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় ভাড়া করা প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলায় একা থাকতেন। কিন্তু সেখানে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রেজিস্ট্রার ওই নারীকে উপাচার্যের খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন।
এর পর থেকে ওই নারী প্রতিদিন তাঁকে খাবার পৌঁছে দিতেন। সেই সুবাদে উপাচার্য বিভিন্ন সময় তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। ভুক্তভোগী তাঁর কথায় রাজি না হয়ে বিষয়টি রেজিস্ট্রারকে জানান। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই ভুক্তভোগী খাবার দিতে গেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় উপাচার্য তাঁকে ধর্ষণ করেন।
উপাচার্যের কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে ওই নারী তাঁর স্বামীকে তালাক দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে উপাচার্য ও ওই নারী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করেন। পরে উপাচার্য তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে ওই নারী আদালতের শরণাপন্ন হন।
উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খান ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেছেন। তিনি সেখানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।
সূত্র : আজকের পত্রিকা