
ডিজিটাল টেকনোলজির এই যুগে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য বুঝাও অনেক চ্যালেন্জিং বিষয়। অনেক অন্যায় কাজকে ন্যায় বলে চালিয়েই শুধু দেয়া হচ্ছে তাই নয়, সেই অন্যায় কাজকে আপনি ন্যায় বলে না মানলে আপনাকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাহলে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য আমরা বুঝবো কিভাবে? যারা বুঝতে চান তারা ঠিকই বুঝতে পারবেন। যিনি মিথ্যা কথাকে কৌশল বলে চালিয়ে দিচ্ছেন তিনি হাজারটা যুক্তি দিলেও আপনাকে বুঝতে হবে তিনি আর কিছু নন, জাষ্ট মিথ্যুক। যিনি মানুষকে ঠকাচ্ছেন তিনি যত যুক্তিই দিক না কেন তিনি একজন প্রতারক।
এইযে প্রতারণা করা, মিথ্যা কথা বলা এগুলো কেন করতে হয়? কতগুলো বিষয় এড়িয়ে চললে এসব পাপাচার থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব বলে আমি মনে করি। একটা হলো অযথা নাম কামাই করা। আমি যদি সত্যিই সমাজের কোন উপকার করে থাকি, তা যতই গোপনে করি না কেন তা ছড়িয়ে পড়বেই। যেমন রজনীগন্ধা আপনি খাটের নীচে লুকিয়ে রাখলেও সুগন্ধ ছড়াবেই। সমস্যা হলো কিছু না করেই যখন আমরা নাম কামাতে চাই তখনই প্রতারণা করতে হয়, মিথ্যা বলতে হয়। অপর আর একটি বিষয় হলো দ্রুত ধনী হবার চেষ্টা করা। অর্থ অনর্থের মুল।
অতিরিক্ত অর্থ কামাতে গেলেই আপনাকে প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিতে হবে। অতএব প্রতারণা ও মিথ্যা বলার সাথে অবৈধ অর্থবিত্ত, ক্ষমতা ও ফালতু নাম কামানো একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। দিনশেষে একটা কথা মনে রাখা দরকার, সেটা হলো আপনি যতবড় লাট সাহেবই হন না কেন কিংবা যত অর্থের মালিকই হন না কেন তাতে আমার কি এসে যায়? সমাজের আর দশজন মানুষের কি এসে যায়?
দুদিন আগেও যাঁদের দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্টিনে নাস্তা খেয়ে মাত্র পাঁচ টাকার বিল না দিয়ে চলে এসেছে, সেই তিনিই এখন মোটিভেশনাল স্পিকার। তার বক্তব্য হাজার হাজার শেয়ার হচ্ছে। কিন্তু কেন? কারণ একটাই তিনি এখন হাজার কোটি টাকার মালিক।
কাজেই কে কি করলো না করলো সেটা বিষয় না, বিষয় হলো আপনি আমি কি করলাম! আমরা কি টাকা আর ফালতু ক্ষমতা দেখে নমঃ নমঃ শুরু করে দিলাম? টাকা, ক্ষমতা কিভাবে অর্জিত হলো, সেটা দেখবেন না? এরকম কি আছে যিনি হাজার কোটির মালিক তার কোন মৃত্যু নেই, অসুখ নেই? যদি থাকে তাহলে আসুন নিজের বিবেক বিবেচনা দিয়ে চলি! ন্যায় নীতির সমাজ গড়ে তুলতে লড়াইটা জারি রাখি। যেন তেন প্রকার মোহকে আমরা পা’য়ে দলে পিষ্ট করে শিরদাড়াঁ সমুন্নত রাখি।