
হিন্দি চলচ্চিত্রে যে কজন অভিনেত্রী পুরুষ সহকর্মীর সহায়তা ছাড়াই বক্স অফিসে ঝড় তুলতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রীদেবী অন্যতম। একটা সময় তাকে বলা হতো বলিউডের ‘নারী অমিতাভ বচ্চন’। ওই সময় তিনি শাসন করতেন বলিউডের দুনিয়া। সেই নব্বই দশকেই প্রায় ১ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিতেন এই অভিনেত্রী। হিন্দি সিনেমার জগতে শ্রীদেবীকেই প্রথম ‘সুপারস্টার’ হিসেবে বিবেচিত করেছিলেন প্রযোজকরা। শুধু হিন্দি নয়, তামিল, তেলুগু, মালয়ালম এবং কন্নড় চলচ্চিত্র মঞ্চেও সদর্পে দক্ষতা প্রমাণ করেছিলেন তিনি।
আজ তার ৬০তম জন্মবার্ষিকী। বিশেষ এই দিনে ভক্ত অনুরাগী, সহকর্মী থেকে শুরু করে সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন অভিনেত্রী। তিনি না থাকলেও লাখো ভক্তের হৃদয়ে তিনি আজও অমলিন।
এদিকে মায়ের জন্মদিন উপলক্ষে আবেগঘন পোস্ট দিলেন তার দুই মেয়ে জাহ্নবী কাপুর এবং খুশি কাপুর। নিজের ইনস্টাগ্রাম থেকে ছবি পোস্ট করে জাহ্নবী লিখেন, ‘শুভ জন্মদিন মা।’ সেই সঙ্গে পোস্টের ক্যাপশনে মাকে ভালোবাসার কথা তুলে ধরেছেন জাহ্নবী।
১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট তামিলনাড়ুতে জন্মেছিলেন শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়াপ্পন। তবে সবাই তাকে চেনেন শ্রীদেবী নামে। ছোট থেকেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও অসীম সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন। মাত্র চার বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন। আট বছর বয়সে, ১৯৭১ সালে মালায়লাম সিনেমা ‘পুমবাতা’য় অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা শিশু অভিনেত্রীর পুরস্কার পান শ্রীদেবী। এরপর পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে তিনি ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ‘চাঁদনি’, ‘চালবাজ’, ‘তোফা’, ‘গুমরাহ’, ‘মাওয়ালি’, ‘নাগিনা’ ও ‘সদমা’ অন্যতম।
তামিল সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করা শ্রীদেবী দক্ষিণ ভারতকেও বঞ্চনা করেননি। অভিনয় চর্চার পাশাপাশি একাধিক দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা শিখেছিলেন; যা পরবর্তীকালে দক্ষিণ ভারতে তার অভিনয়ের দরজা খুলে দিয়েছিল। অনর্গল তেলেগু, তামিল, মালায়ালম, কন্নড় ও হিন্দি বলতে পারতেন তিনি। রজনীকান্ত, কমল হাসান থেকে শুরু করে চিরঞ্জীবী- সবার সঙ্গেই কাজ করেছেন চুটিয়ে।
১৯৭৬ সালে কে বালাচন্দরের সিনেমা ‘মুন্ড্রু মুদিচ্চু’ সিনেমা ছিল শ্রীদেবীর ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি অভিনেত্রীকে। ১৯৯৭ সালে শ্রীদেবীর ‘জুদাই’ সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু ২০১২ সালে ‘ইংলিশ-ভিংলিশ’ সিনেমার মাধ্যমে আবারও ফিরে আসেন। ১৫ বছর পর সেই নির্বাসন ভেঙে ফিরে এসে পান ‘ভারতের মেরিল স্ট্রিপ’ খেতাব। ২০১৭ সালে সর্বশেষ তাকে ‘মম’ সিনেমায় দেখা গেছে। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের জুমেরা হোটেলে নিজের ঘরেই বাথটাবে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন সুপারস্টার শ্রীদেবী।