
বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন স্পেনের জয় ছাপিয়ে আলোচনায় আসেন দলটির ফুটবল প্রধান লুইস রুবিয়ালস। গত ২০ তারিখের সেই ঘটনায় নিয়ে নানা ঘটনা, আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শাস্তিমূলক কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছিল ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা। এবার সংস্থাটির সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন।
ফাইনালের দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইনফান্তিনো। তার সামনেই ঘটেছে চুমুকাণ্ড। গতকাল বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফাইনালের বাঁশি বাজার পর যা (চুমুকাণ্ড) ঘটেছে, সেজন্য চ্যাম্পিয়নদের উপযুক্ত উদযাপন নষ্ট হয়েছে।’
ঘটনার পরের ঘটনাপ্রবাহও পছন্দ হয়নি ফিফা সভাপতির ‘এবং এর পরের দিনগুলোতে যা হয়েছে তা হওয়া উচিত নয়। ফিফার শৃঙ্খলা কমিটি তাৎক্ষণিক তাদের দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। শাস্তিমূলক কার্যক্রম (ফিফার) নিয়ম অনুযায়ী চলবে। মাঠ এবং মাঠের বাইরে নারী ফুটবলকে আরও কীভাবে সমর্থন করা যায় সেদিকে আমাদের মনোনিবেশ করা উচিত।’
স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ের পর দলের ফুটবলার জেনি হার্মোসোর মাথায় দুহাত রেখে চুমু দিয়ে বসেন স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালস। চুমুকাণ্ডের পরপরই ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে হার্মোসো বলেছিলেন, ‘আমি সেটি পছন্দ করিনি।’ যদিও পরে দেওয়া এক বিবৃতিতে রুবিয়ালসের পক্ষে সাফাই গান। স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের দেওয়া এক বিবৃতিতে হার্মোসো দাবি করছিলেন, বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি যা করেছেন, তা নেহাতই স্নেহ এবং কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।
রুবিয়ালস বলেছিলেন, ‘কোনো কিছু উদযাপন করতে দুই বন্ধুর মধ্যে চুমুর মতো’ ছিল ওটা। যারা এটি ভিন্নভাবে নিচ্ছে তাদেরকে ‘নির্বোধ ও ইতর লোক’ বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
এরপর জল অনেকদূর গড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্পেনের সমতা বিষয়ক মন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রী। পরে ক্ষমা চান রুবিয়ালস। বিষয়টি নিয়ে পরে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন হার্মোসো। পেশাদার নারী ফুটবলারদের সংগঠন ফুটপ্রো ইউনিয়ন ও নিজের এজেন্সির মাধ্যমে যৌথ বিবৃতিতে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেন হার্মোসো। তিনি বলেছেন, ‘এই ধরনের ঘটনায় যেন কেউ কখনোই শাস্তি না পেয়ে পার পায় এবং এই ধরনের অগ্রহণযোগ্য আচরণ থেকে নারী ফুটবলারদের রক্ষা করতে তাদের শাস্তি দেওয়া হয় ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
পরে রুবিয়ালসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কার্যক্রমে পদক্ষেপ নেয় ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা। যদিও পদ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুবিয়ালস। তবে তিনি পদে থাকলে জাতীয় দলের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির উল্লেখযোগ্য প্রায় সব নারী ফুটবলার।