12.8 C
Toronto
বুধবার, মার্চ ১৯, ২০২৫

এখনো তাদের হাতেখড়ি হয় তালপাতায়!

এখনো তাদের হাতেখড়ি হয় তালপাতায়! - the Bengali Times

শিক্ষা জীবনের আনুষ্ঠানিক শুরু রীতিই হাতেখড়ি। এই রীতিতেই প্রথমবারের মতো শিশুদেরকে অক্ষরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। একটা সময় ছিল যখন দোয়াতের কালি আর তালপাতায় শিক্ষা জীবন শুরু করতো শিশুরা। সময়ের পরিবর্তন সেই তালপাতা আর কালির দোয়াত এখন জায়গা নিয়েছে স্মৃতির পাতায়। তবে নতুন করে সেই শিক্ষা ব্যবস্থার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বাগেরহাটের চিতলমারীর ‘শিশু শিক্ষা নিকেতন’ নামের একটি পাঠশালা। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলতে থাকা এ পাঠশালা থেকেই তালপাতায় শিক্ষা জীবন শুরু করছে কোমলমতি শিশুরা। তবে পাঠশালাটিতে সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ ও জলাবদ্ধতাসহ রয়েছে নানা সমস্যা। সমস্যাগুলো সমাধানে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

- Advertisement -

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিণ ডুমুরিয়া গ্রামে ১৮ বছর ধরে শিশু শিক্ষা নিকেতন নামের একটি পাঠশালা চালাচ্ছেন ৭৫ বছর বয়সী পণ্ডিত কালিপদ বাছাড়। স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় চলা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশুরা দোয়াতের কালি আর বাঁশের কঞ্চির কলম দিয়ে তালপাতায় লিখে শুরু করছে তাদের শিক্ষা জীবন। যা বর্তমান প্রজন্মের কাছে রূপকথার গল্প মনে হতে পারে। পাঠশালাটিতে গেলে অর্ধশত শিশু তালপাতায় অক্ষর জ্ঞান চর্চার দেখা মিলে।

পাঠশালার শিক্ষক পন্ডিত কালিপদ বাছাড় বলেন, ‘তালপাতায় অক্ষর চর্চায় হাতের লেখা ভালো হয়। এই পাঠশালা থেকে শিশুরা প্রথম অক্ষরজ্ঞান লাভ করে। তারা স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, বানান, যুক্তাক্ষর, শতকিয়া, নামতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে এখান থেকে। এই পাঠশালা থেকে ১৮ বছর ধরে শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তুলছি।’

স্থানীয় অভিভাবক লক্ষ্মী রানী বলেন, ‘আমাদের পাঠশালার শিক্ষক কালিপদ বাছাড় শিশুদের খুব ভালো পড়ান। তিনি হাতে ধরে শিশুদের তালপাতার লেখা শিখান। এ কারণে আশপাশের প্রায় পাঁচটি গ্রামের ৫০ জন শিশু এই পাঠশালায় পড়াশুনা করে। ভালো পড়াশুনার কারণে আমারাও আগ্রহ নিয়ে শিশুদের এই পাঠশালা ভর্তি করি। প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য মাসে মাত্র ১৫০ টাকা নেন শিক্ষক কালিপদ বাছাড়। যা দিয়ে তালপাতা ও দোয়াত কালি পাঠশালাটির বিভিন্ন উপকরণ কেনেন তিনি।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, ‘চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া দক্ষিণপাড়া নামের একটি পাঠশালা রয়েছে। পাঠশালাটিতে এখনও সেই পুরাতন আমলের তালপাতার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যেটা আমাদের পুরাতন শিক্ষা ব্যবস্থা ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। আমি জানতে পেরেছি পাঠশালাটিতে বিদ্যুৎ ও জলাবদ্ধতা বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুতই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles