
বাজেভাবে এবং আগেভাগে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা সমাপ্ত হয়েছে বাংলাদেশের। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রত্যাশার পারদ ছিল সুউচ্চ। এমন একটা অপ্রত্যাশিত আসর শেষে দেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্সের পেছনে দায় দেখছেন ক্রিকেট বোর্ড সংশ্লিষ্টদেরও।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলেন, কিছু ব্যাপার মেলানো প্রয়োজন। সেটা হলো, খারাপ হওয়ার প্রথম দায় অবশ্যই ক্রিকেটারদের। এরপর আর কি কারও দায় নেই? শুধু ক্রিকেটারদের ঘাড়ে চাপিয়ে যদি শেষ করেন, তাহলে মনে রাখবেন, আরও খারাপ সময় অপেক্ষা করছে। প্রমাণ তো আগেও অহরহ দেখা গেছে!
কোনো টুর্নামেন্টে বাজে পারফরম্যান্সের পর সাধারণত অধিনায়ক কিংবা কোচ বদল নিয়মিত চিত্র যে কোনো দলের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই এর খুব ব্যতিক্রম আছে তা কিন্তু নয়। এ সম্পর্কে মাশরাফী বলেন, আগের অভিজ্ঞতা থেকে এবারও বলে দেওয়া যায়, এখন সামনে কী হবে। হয়তো কাউকে বাদ দেওয়া হবে, কারও ওপর অদৃশ্য রাগ ঝাড়া হবে, রিয়াদকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হবে। সমর্থকরা যে ক্রিকেটারকে পছন্দ করছে না, তার ওপর ঝাল মিটিয়ে সমর্থকদের শান্ত করা হবে। সাংবাদিক ভাইদের নানা কিছু বোঝানোর চেষ্টা করা হবে।
লম্বা স্ট্যাটাসে তিনি যোগ করেন, ক্রিকেটারদের দায় দিন, ভালো কথা। সেটা তাদের প্রাপ্য। পাশাপাশি নিজেরাও বোঝার চেষ্টা করুন যে আপনারাও ব্যর্থ! কারণ, এই পুরো প্রক্রিয়ার অংশ আপনারাও। আপনারা অন্যবারের মতো বলতেই পারেন, অমুকের জন্য পারিনি, তমুক ব্যর্থ হয়েছে, এজন্যই পারলাম না। সেক্ষেত্রে তো দায়টা আপনাদেরও, কারণ উপযুক্ত বিকল্প আপনারা তৈরি করতে পারেননি। সেই দায়িত্ব তো আপনাদের কাঁধেই ছিল, আপনাদের তো আগেই বোঝা উচিত ছিল! আপনারা সেটা পারেননি। তাই দয়া করে, সত্যকে আলিঙ্গন করুন এবং নতুনভাবে কাজ শুরু করুন।
সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক আরও বলেন, সামনে আরেকটি বিশ্বকাপের দোহাই দিয়ে, ক্রিকেটারদের ক্ষতি না করে প্রক্রিয়াটা ঠিক করুন। দেখবেন, তখন দল আপনাআপনি ভালো খেলবে। দলকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনাদেরই। তাই দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে দায়িত্ব নিয়েই কথা বলা বা কাজ আমরা আশা করি। সবচেয়ে বড় শঙ্কা আমি যা দেখছি, ক্রিকেটারদের বলির পাঠা বানিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দেওয়া হবে যে, আমরা অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা সামনের বিশ্বকাপে বড় ভূমিকা রাখবে। আসলে এতে ক্রিকেটের কোনো লাভ হবে না। ক্রিকেটার তৈরি ও গড়ে তুলতে আধুনিক ক্রিকেটে প্রক্রিয়াগুলো দেখুন এবং সেগুলো দেশের ক্রিকেটে অ্যাপ্লাই করুন। তাদেরকে যত্ন করুন, হয়তো তারা সামনের পথচলায় আমাদের দারুণ সব মুহূর্ত উপহার দেবে।