2.1 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

ছেলের টিফিন বক্সে মাদক ভরে দেন বাবা!

ছেলের টিফিন বক্সে মাদক ভরে দেন বাবা! - the Bengali Times
প্রতীকী ছবি

সাইকেলের টিউব বা ঘাসের বস্তা— ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিভিন্ন কৌশলে পাচার হয় মাদক। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাবা-ছেলে সমীকরণ। বিএসএফ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিনের পর দিন মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে মাদক, জাল টাকা ও সোনা-গয়না। আর তা হচ্ছে স্কুল শিক্ষার্থীর টিফিন বক্সের মাধ্যমে। তাদের বাবারা টিফিন বক্সে রুটি-সবজির সঙ্গে জাল টাকা, হেরোইনও ভরে দিচ্ছেন।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, শমসেরগঞ্জ, সুতি, জলঙ্গির মতো মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকা হয়ে পাচারের অভিযোগে একের পর এক বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশের দাবি, জনবহুল এলাকায় পাচার সামগ্রী হাতবদল করতে টার্গেট করা হচ্ছে শিশুদের। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে তাদের বাবারাও। মূলত কৃষিজীবী যুবক এবং বয়স্করা বাড়তি কিছু আয়ের জন্য অপরাধের দুনিয়ায় যুক্ত করছেন নিজের ছোট সন্তানকে।

- Advertisement -

গত ২৯ আগস্ট শমসেরগঞ্জের ডাক বাংলো এলাকায় সোহেল রানা নামে ১৫ বছরের স্কুল শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার কাছে পাওয়া যায় ৫০০ টাকার ১১২টি জাল নোট। তদন্তে জানা যায়, সীমান্ত পেরিয়ে এই জাল টাকাগুলো ভারতে এনেছিলেন সোহেলের বাবা। তিনি হাত বদলের জন্য ছেলেকে বিশ্বস্ত মনে করেছেন। আর ছেলের স্কুলব্যাগ হয়েছে বাবার পাচার কারবারের নিরাপদ আশ্রয়।

এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসে মুর্শিদাবাদের বাউরিয়া থেকে তিন লাখ টাকার জাল নোটসহ গ্রেপ্তার হয় দুই কিশোর। তাদের এক জন দশম শ্রেণির ছাত্র, অন্য জন একাদশ শ্রেণির। তাদের স্কুল ব্যাগে ওই জাল টাকা পাচারের চেষ্টা চলছিল। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদের সাজুরমোর থেকে কৈশোরে পা দেওয়া তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। তিন জনের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে মেলে দুই লাখ টাকার জাল নোট এবং ১৫০ গ্রাম হেরোইন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অষ্টম শ্রেণির ওই তিন শিক্ষার্থী জানায়, ওই টাকা তারা পেয়েছে যে যার বাবার কাছে। এক তদন্ত কর্মকর্তা বিস্ময় চেপে রাখতে পারেননি। জানতে চান, তাদের বাবা সন্তানের ব্যাগে জাল নোট আর হেরোইনের প্যাকেট ঢুকিয়ে দিচ্ছে কিনা? উত্তরে তিন কিশোরই ‘হ্যাঁ’ বলেছে।

এদিকে পর পর এমন বেশ কিছু ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফের ডিআইজি একে আর্যের ভাষ্য, পাচারকারীরা কিছু দিন পর পর তাদের কৌশল বদলায়। আমরাও সতর্কতার সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিই। বর্তমানে শিশুদের ঢাল বানিয়ে পাচারের পরিকল্পনা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা অবগত। বেশ কিছু গ্রেপ্তারও হয়েছে।

জঙ্গিপুর জেলার পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ বলেন, জেলার সীমান্তবর্তী অংশগুলোতে অল্পবয়সী পাচারকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। চিন্তার ব্যাপার হল, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের হাত ধরেই তারা অপরাধ জগতে প্রবেশ করছে। এই প্রবণতা যে কোনও মূল্যে ঠেকাতে হবে।

সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles