ধরুন, আপনি বন্ধুদের সঙ্গে কোনো পণ্য নিয়ে আলাপ করলেন। আপনার মনে হলো, বেশ কিছুক্ষণ পর ওই পণ্যের বিজ্ঞাপন আপনার ফেসবুকে চলে এল। আপনি ভাবছেন, কোন কিছু নিয়ে ভাবলেও স্মার্টফোনে তার বিজ্ঞাপন দেখায়। বিষয়টি কাকতালীয় নাকি ফেসবুক সবার কথা শুনছে- এমন প্রশ্ন মনে আসাটাই স্বাভাবিক। তখন ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়।
এমন সন্দেহ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রদূত ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও ইনস্টাগ্রামের অ্যাডাম মোসেরি বার বার এ বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। তবে স্মার্টফোন ব্যবহার করে আড়িপাতার বিষয়টি তারা বরাবরই অস্বীকার করে গেছেন।
প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষজ্ঞওরাও মনে করেন, জাকারবার্গরা সত্যিই বলেছেন। কারণ, আড়িপাতার কাজটি বেআইনি হওয়ায় সেটা সম্ভব না। দ্বিতীয়ত, আপনার মনের কথা কেউ শুনতে বা রেকর্ড করতে পারবে না।
আড়িপাতা নয়, ট্র্যাকিং
ফেসবুক যদি আপনার আলাপ না শুনে তাহলে কীভাবে আপনার মনের মত ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে? কোনো কিছু নিয়ে আলাপ করার পর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে তার বিজ্ঞাপন দেখার কারণ হল- প্ল্যাটফর্মগুলো অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবহারকারীর কার্যক্রম ট্র্যাক করে থাকে।
আরও পড়ুন :: স্মার্টফোন গরম না হওয়ার কিছু কৌশল
ধরুন আপনি এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গেলেন। সেখানে আপনার বন্ধু এক বিশেষ খাবার নিয়ে গল্প শুরু করল। এর কিছুক্ষণ পর আপনার ফেসবুক পেজে খাবারটি নিয়ে বিজ্ঞাপন দেখা যাবে। এ ঘটনায় ফেসবুক ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাবারটির বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছে।
ব্যবহারকারীর অনলাইন আচরণ পর্যবেক্ষণ করে ফেসবুক। আপনি কোন ওয়েবসাইটে যান, অনলাইনে কোন পণ্য কিনেন সব ফেসবুকের পর্যবেক্ষণে থাকে। আপনি যে বিজ্ঞাপনগুলি দেখেন, তাও ফেসবুকের নজরে আছে। আগে থেকে অনুমতি দেওয়ার কারণে সাইন ইন করা না থাকলেও ফোনের লোকেশন চালু থাকলে ফেসবুক আপনাকে ট্র্যাক করতে পারে।
উপরের ঘটনায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আপনি ও আপনার বন্ধুর লোকেশন চিহ্নিত করেছে ফেসবুক। আপনারা যে ফেসবুকে বন্ধু তা প্ল্যাটফর্মটি আগেই জানে। কোনো এক সময় সেই বন্ধু খাবারটি ফেসবুকে সার্চ করে, সেই যোগসূত্র মিলিয়ে আপনাকে ওই খাবারের বিজ্ঞাপন দেখানো হয়।
ফেসবুক অ্যালগারিদম ব্যবহারকারীর আগ্রহ, লোকেশন, বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হওয়ার তালিকা ও হ্যাশট্যাগের মত বিভিন্ন তথ্য তুলনা করে। ব্যবহারকারীর বন্ধুদেরও বিভিন্ন বিষয়ের আগ্রহ পর্যবেক্ষণ করে ফেসবুক বিজ্ঞাপন দেখায়।
কীভাবে ট্র্যাকিং বন্ধ করবেন
ফেসবুককে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে ট্র্যাকিং ও ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার সীমিত করা যাবে। তবে পুরোপুরি ট্র্যাকিং বন্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। জিপিএস লোকেশন বন্ধ করেও এটা করা যায়।