
১
মাঝে মাঝে এমন একটা অনভূতি হয়, ঘুমের ঘোরে কি একটা যেনো ঘটে চলে। হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে চিনতে পারি না! কখনো নিজেকে খুব হালকা লাগে। অদ্ভুত এক আলোকরশ্মি আমাকে ঘিরে থাকে। আলোর নাচন শরীরে ভর করে। একটা শিহরন টের পাই। ভাললাগার শিহরন। কোথা থেকে আসে আবার কোথায় চলে যায়! নিজের শরীরে নিজে চিমটি কেটে অনুভব করার চেষ্টা করি এই আমি কে! কোথা থেকে এসেছি! কি আমার পরিচয়! কোথায় চলে যাব একদিন! এই আমি কী সত্যিকার আমি! এ রকম একটা অনুভূতি আমাকে অদৃশলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর তখন হালকা হয়ে যায় মন প্রান। পাখী হয়ে যায় প্রাণ। ঠিক তখন মনে হয় এই পৃথিবীতে আয়ু বেশিদিন নাই আর। পৃথিবীর রূপ রস অনেক ভোগ করেছি। এবার যাওয়ার জন্য অপেক্ষা। শুধু কখন ব্যাপাৱটা ঘটবে সেটাই জানা নাই। তবে সেই যাওয়াটা সুন্দর হোক এই ভাবনা সবসময় মাথাৱ মধ্যে ঘুর ঘুর করে। যতটুকু সম্ভব কারো বোঝা না হয়ে বিদায় নেওয়া। চলে যাওয়া এমন কোনো ঘটনা না।
২
পৃথিবীতে বেঁচে থাকা দিনগুলোতে অনেক অন্যায় করেছি, ভুল করেছি, কষ্ট দিয়েছি মানুষকে, সে সব মনে করে মন ব্যাথাতুর হয়ে ওঠে। যাদের কষ্ট দিয়েছি, যাদের সাথে অন্যায় করেছি সবাইকে তো খুঁজে পাব না। জানা অজানা মানুষেরা কে কোথায় হারিয়ে গেছে জানি না। তাই তাদের উদ্দেশ্যে সবসময় বলি তোমাদের সবার কাছে ক্ষমা চাই। আত্মীয়, বন্ধু, পরিবার, মা-বাবা, ভাই-বোন, চেনা-অচেনা, পরিচিত, অল্প পরিচিত সবার কাছে। ক্ষমা করো। আমিও সবাইকে ক্ষমা করে দেই।
প্ৰতিদিন ভোর পাঁচটাৱ দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গে। এলার্ম ছাড়াই ঘুম ভাঙ্গে। ভোরের নৈশব্দ আর ঘুম ভাঙ্গা পাখীদের ডাকের মধ্যে আমি ফজরের নামাজ পড়ি। সবসময় পারিনা অবশ্য। নামাজ শেষে সবার জন্য প্রার্থনা করি। মানুষের মঙ্গল কামনা করি। আমার সকল চেনা মানুষ, বন্ধু, আত্মীয়, ছেলে-মেয়ে সবার মঙ্গল কামনা করি। তখন কোথা থেকে একটা শিহরন এসে আমাকে ছুঁয়ে যায়। একটা পারলৌকিক অনুভূতি টের পাই। কখনো জাগরনে, কখনো অবচেতনে, কখনো ঘুমের মধ্যে। তখন চোখ ভিজে যায় জলে..।
টরন্টো ২ অক্টোবর ২০২৩