9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

পুরুষ থেকে নারী হয়ে হো চি মিন বললেন, ‘গোপন করার কিছু নেই’

পুরুষ থেকে নারী হয়ে হো চি মিন বললেন, ‘গোপন করার কিছু নেই’ - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষ থেকে নারী হয়েছেন হো চি মিন ইসলাম। স্তন ও জরায়ু প্রতিস্থাপন (ইমপ্ল্যান্ট) করে রূপান্তরিত হয়েছেন তিনি। তবে বাবার দেওয়া নিজের নামটি আর পরিবর্তন করেননি।

এ নিয়ে হো চি মিন ইসলাম বলেন, শরীরটা পুরুষের হলেও ছোটবেলা থেকেই নিজেকে নারী ভাবতাম। অবশেষে অস্ত্রোপচার করে পুরুষ থেকে নারী হয়েছি, গোপন করার কিছু নেই। এখন আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে একজন নারী।

- Advertisement -

হো চি মিনের জন্ম বগুড়ায়। বাবা মারা গেছেন ২০১৩ সালে। মা ও এক বোন আছেন। একসময় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ থাকলেও এখন স্বাভাবিক। হো চি মিনকে তারা মেনে নিয়েছেন। অস্ত্রোপচারের সময় মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছেন।

ভারতের দিল্লির অলমেকস প্রিমিয়ার ট্রান্সজেন্ডার সার্জারি ইনস্টিটিউটে অস্ত্রোপচার করেছেন হো চি মিন ইসলাম। ২৯ বছর বয়সী হো চি মিন জানান, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল স্তনের অস্ত্রোপচার হয়। সাত দিন পর আরেক অস্ত্রোপচারে কৃত্রিমভাবে স্ত্রী প্রজননতন্ত্র তৈরি করা হয়। ৫ মে দেশে ফেরেন তিনি।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হো চি মিন কাজে যোগ দেন ২০ মে। জটিল ওই অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফেরার পর তিনি এরই মধ্যে একবার নেপালও ঘুরে এসেছেন।

তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দিল্লিতে সরকারিভাবে ট্রান্সজেন্ডারদের অস্ত্রোপচারের জন্য অনুমোদিত হাসপাতালে (অলমেকস প্রিমিয়ার ট্রান্সজেন্ডার সার্জারি ইনস্টিটিউট) তার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক নরেন্দ্র কৌশিক। অস্ত্রোপচারের আগে দেড় ঘণ্টা চলে কাউন্সেলিং। হাসপাতালে থাকতে হয়েছে ১৮ দিন। খরচ হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

থাইল্যান্ডে এমন অস্ত্রোপচারে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হয় জানিয়ে হো চি মিন বলেন, এর আগে লেজার চিকিৎসা ঢাকাতেই করেছিলেন তিনি। আর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেন পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে কাজ করার আগে হো চি মিন ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়েই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবন্ধিত নার্স ছিলেন। দুই বছর কাজ করেছেন কার্ডিয়াক আইসিইউতে। ২০২১ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে জনস্বাস্থ্যের ওপরে মাস্টার্স করেন ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়েই।

হো চি মিন বলেন, ‘আইডেনটিটি ক্রাইসিস (পরিচয়সংকট) তীব্র মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা যার হয়নি, তিনি কখনো বুঝতে পারবেন না। এখন আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে।’

অস্ত্রোপচারের আগে নিজের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করতে হয়েছে উল্লেখ করে হো চি মিন বলেন, ‘নিজের আইডেনটিটি বা পরিচিতির জন্য এবং নিরাপত্তার জন্যও অস্ত্রোপচার করাটা জরুরি ছিল। ইউটিউবে অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন ভিডিও দেওয়া আছে, তা দেখেছি। তবে এ নিয়ে ভালো গবেষণা নেই। জীবনের ঝুঁকি আছে, তা তো জানাই ছিল। ১০ লাখ টাকা জোগাড় করাটাও কঠিন ছিল। নিজের জমানো টাকার পাশাপাশি ঋণ করতে হয়েছে।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles