9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ

সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ - the Bengali Times

ফরিদপুরের মধুখালীতে সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন।

- Advertisement -

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি এতিমখানার অনুকূলে বরাদ্দকৃত এক কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার মোল্যা। অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেন ওই সাতটি এতিমখানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

মধুখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার মোল্যা পরস্পর যোগসাজশে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার খোদাবাসপুর মোমেজান নেচ্ছা মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি মো. মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শরীফের সহায়তায় প্রকৃত এতিম শিক্ষার্থীর চেয়ে মিথ্যাভাবে অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫২ লাখ ৯২ হাজার টাকা, ভূষনা লক্ষনদিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং এর সভাপতি মো. মোতালেব হোসেন ও ক্যাশিয়ার মো. মোশারফ হোসেনের সহায়তায় অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।

এছাড়া মাকড়াইল মাজেদা খাতুন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি মো. আবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রইচ মিয়ার সহায়তায় ১৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা, ফয়জিয়া মুসলিম এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. মহিউদ্দিনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ১৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, মধুখালী মহিলা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি মো. জাহাঙ্গির মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. শহীদুল্লাহ দ্বয়ের সহায়তায় ১৬লাখ ৩২ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়।

গোন্দারদিয়া দারউস সালাম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাধারন সম্পাদক মো. আলম বিশ্বাস ও সাবেক সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমানের সহায়তায় ১৩ লাখ আট হাজার টাকা এবং ব্যাসদী লাল বানু অরফানেজের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর ও কোষাধ্যক্ষ মো. আলী আকবর দ্বয়ের সহায়তায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে পাঁচ লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাত করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায়।

এজাহারে বলা হয়, কল্লোল সাহা, মো. বাবুল আক্তার মোল্যা, মো: মজিবর রহমান, আব্দুর রশিদ শরীফ, মো: মোতালেব হোসেন, মো: মোশারফ হোসেন, মো: আবুল হাসান, মো: রইচ মিয়া, মাওলানা মো: মহিউদ্দিন, মো: জাহাঙ্গীর মিয়া, মাওলানা মো: শহীদুল্লাহ, মো: আলম বিশ্বাস, মো: হাফিজুর রহমান, মো: আজিজুর রহমান, মো: আলী আকবর গণ পরস্পর যোগসাজসে অসৎ উদ্দেশ্যে লোভের বশবর্তী হয়ে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি এতিমখানায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করেন।

দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারিশ করে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য দাখিল করা হয়।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ এতিমখানা ও মাদ্রাসার দায়িত্বরত ১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ভাতা সংক্রান্ত অসত্য তথ্য সরবরাহ করে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সূত্র : ঢাকাটাইমস

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles