
বিবাহিত জীবন সুখী ও প্রেমময় হবে, এমনটা আশা করেন সবাই।কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবার ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না।কারণ, দুজন আলাদা মানুষের ভালোলাগা, মন্দলাগা, পছন্দ-অপছন্দ কখনোই এক হয় না। তবে সমসময় যে একই ঘটনা ঘটে এমনটা নয়। বিবাহিত সম্পর্কের মধ্যে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস থাকা সবচেয়ে জরুরি।
তবে অনেকেই আছেন, যারা বিয়ের পর তাদের জীবন আমূল বদলে গেছে বলে অভিযোগ করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের দাম্পত্য সম্পর্কতে একঘেয়েমি এসে যায়। এবং এটা একটা সময়ে বিচ্ছদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, মানুষের জীবনে যেমন রাশিচক্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, ঠিক সে রকম আপনি কোন মাসে বিয়ে করেছেন দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ায় ক্ষেত্রে তারও একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একটি বৈবাহিক সম্পর্ক কতটা সুখের হবে, তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
এ ক্ষেত্রে বিয়ের সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাত্ কোন মাসে বিয়ে হয়েছে তা থেকে বিবাহিত জীবনের ওপর কতটা প্রভাব বিস্তার করে তা জানা যায়।
জানুয়ারি
এই মাসে বিয়ে হলে তার ওপর কুম্ভ রাশির প্রভাব থাকে। জ্যোতিষ গণনা অনুসারে, জানুয়ারিতে বিয়ে হলে সেই দম্পতিরা সুখী বিবাহিত জীবন কাটান। এদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন কখনো আলগা হয় না। এই মাসে যাদের বিয়ে হয়, তারা সঙ্গীকে নিত্য নতুন সারপ্রাইজ দিয়ে চমকে দিতে ভালোবাসেন। বিয়ের বহু বছর পরেও এদের মধ্যে প্রেম অটুট থাকে। জানুয়ারি মাসে যাদের বিয়ে হয়, তাদের মধ্যে ডিভোর্সের ঘটনা খুবই কম দেখা যায়।
ফেব্রুয়ারি
অত্যন্ত আবেগপূর্ণভাবে এক অপরের সঙ্গে জুড়ে থাকেন ফেব্রুয়ারি মাসের বিবাহিতরা। আপনার যদি ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে হয়, তাহলে আপনাদের সম্পর্কের ওপর মীন রাশির প্রভাব রয়েছে। এই মাসের বিবাহিত দম্পতিরা স্বার্থহীনভাবে একে অন্যকে ভালো রাখার চেষ্টা করেন। বৈবাহিক সম্পর্কে পরস্পরের প্রতি নিজেদের দায়িত্বে এরা কোনোদিন এড়িয়ে যান না। ফেব্রুয়ারি মাসে যাদের বিয়ে, সেই স্বামী স্ত্রী-রা পরস্পরকে দেওয়া কথা যেকোনো মূল্যে রাখার চেষ্টা করেন। এরা একসঙ্গে প্রকৃত প্রেমের শক্তি উপলব্ধি করতে পারেন।
মার্চ
মার্চ মাসে যাদের বিয়ে হয়, তাদের ওপর মেষ রাশির প্রভাব থাকে। এদের মধ্যে সম্পর্কে ওঠা-পড়া চলতে থাকে। মার্চ মাসের বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীরা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ ও বিকর্ষণ দুই-ই অনুভব করেন। আপনার মার্চ মাসে বিয়ে হলে অনেক সময় সঙ্গীর মানসিকতা সঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেন না আপনি। কখনো আপনাদের মধ্যে মতের মিল হবে, আবার কখনো মতানৈক্য প্রবল আকার নেবে। খুব ছোট ছোট সাধারণ বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি শুরু করে দেন মার্চ মাসের বিবাহিতরা। তারপরও পরস্পরের থেকে আলাদা হয়ে যান না এরা।
এপ্রিল
এপ্রিল মাসে যারা বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, জ্যোতিষ অনুসারে তাদের সম্পর্কের ওপর বৃষ রাশির প্রভাব থাকে। জ্যোতিষ অনুসারে, এপ্রিল মাসটা বিয়ের জন্য দারুণ শুভ সময়। এই মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের বিবাহিত জীবনের পথে প্রেম ও রোম্যান্স ভরপুর থাকে। মানসিকভাবে এই জুটি যেমন পরস্পরের কাছাকাছি থাকে, তেমনই শারীরিক ভাবেও এরা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ। এপ্রিল মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের যৌন জীবনও সুন্দরভাবে কাটে।
মে
বছরের পঞ্চম মাস হলো মে। এই মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের বিবাহিত সম্পর্কের ওপর মিথুন রাশির প্রভাব থাকে। মিথুন রাশির মতোই এদের বিবাহিত সম্পর্কেও দুটি স্তর থাকে। মে মাসে যে বিয়েগুলো হয়, সেগুলো সফল হওয়ার যতটা সম্ভাবনা থাকে, পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাও ঠিক ততটাই। মে মাসের বিবাহিতরা হয় সারা জীবন সুখে শান্তিতে থাকেন, আর নয়তো খুব খারাপভাবে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। মে মাসে শুরু হওয়া দাম্পত্য সম্পর্কে অনেক সময় একজনের মধ্যে প্রবল রাগ ও ধৈর্যের অভাব দেখা যায়।
জুন
জুন মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের দাম্পত্য সম্পর্কে কর্কট রাশির প্রভাব থাকে। এই জুটিরা পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের প্রতিমূর্তি হন। কীভাবে বিবাহিত সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তার একটা নিদর্শন তৈরি করেন জুন মাসের বিবাহিতরা। এরা পরস্পরের যত্ন নেন, একে অন্যের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন এবং নিজেদের পরবর্তী প্রজন্মকেও কীভাবে সুন্দর শিক্ষা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তা খুব ভালো করে জানুন জুন মাসের বিবাহিত দম্পতিরা।
জুলাই
আপনি কি জুলাই মাসে বিয়ে করেছেন বা জুলাই মাসে বিয়ের পরিকল্পনা করছেন? তাহলে আপনার জন্য ভালো সংবাদ অপেক্ষা করছে। জুলাই মাসের বিবাহিত সম্পর্কে সিংহ রাশির প্রভাব থাকে। আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক যাতে দারুণভাবে এগিয়ে চলে, তা নিশ্চিত করতে আপনারা দুজনেই অত্যন্ত যত্নশীল। জুলাই মাসে যাদের বিয়ে হয়, তাদের মধ্যে প্রেমের অভাব হয় না কখনো। বিয়ের বহু বছর পরেও এরা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন। সারা জীবন সুখে কাটান এরা।
আগস্ট
আগস্ট মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের ওপর কন্যা রাশির প্রভাব থাকে। এদের বিবাহিত সম্পর্কে নানা ধরনের সংকট আসতেই থাকে। তবে এরা তাতে হাল ছাড়েন না। বিবাহিত সম্পর্কে যে সমস্যাই আসুক না কেন, অগাস্ট মাসের বিবাহিতরা তা একসঙ্গে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেন। পরস্পরের কী প্রয়োজন এবং মনের ইচ্ছে, সেদিকে আরও একটু নজর দিলে অত্যন্ত মজবুত দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন আগস্ট মাসের বিবাহিতরা।
সেপ্টেম্বর
সেপ্টেম্বর মাসে যাদের বিয়ে হয়, তাদের বিবাহিত সম্পর্কের ওপর প্রভাব বিস্তার করে তুলা রাশি। সেপ্টেম্বরের বিবাহিতদের প্রায় আদর্শ দম্পতি বলা যায়। সুখী জীবন কাটানোর রহস্য এরা জানেন। কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সুখে শান্তিতে থাকা যায়, তা ভালো মতো জানা আছে সেপ্টেম্বরের বিবাহিতদের। সম্পর্কের ভারসাম্য কীভাবে বজায় রাখতে হয়, তাও জানা আছে তাদের। পরস্পরের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি এরা করেন না বললেই চলে। সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে এরা একসঙ্গে চেষ্টা করেন।
অক্টোবর
অক্টোবর মাসে যারা বৈবাহিক জীবনে প্রবেশ করেন, তাদের দাম্পত্যের ওপর প্রভাব থাকে বৃশ্চিক রাশির। এই জুটিদের যৌন জীবন ভালো যায়। এরা সবসময় এক অন্যের সান্নিধ্য উপভোগ করেন। একে অন্যকে ছেড়ে এরা থাকতেই পারেন না। যৌন জীবন ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য একটু দেরি করেই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন অক্টোবর মাসের বিবাহিতরা।
নভেম্বর
নভেম্বর মাসে যারা বিয়ে করেন, তাদের সম্পর্কের ওপর ধনু রাশির প্রভাব থাকে। খুব সুন্দরভাবে, বিশেষ কোনো সমস্যা ছাড়াই এদের বিবাহিত জীবন তরতরিয়ে এগিয়ে যায়। এরা পরস্পরের আরাম ও খুশির কথা সবসময় খেয়াল রাখেন। নভেম্বর মাসে যারা বিয়ে করেন, তারা জীবনের সব বাধা বিপত্তির মোকাবিলা একসঙ্গে হাতে হাত রেখে করেন। পরস্পরের জীবনের যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট এরা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন সবসময়।
ডিসেম্বর
ডিসেম্বর মাসের বিবাহিতদের দাম্পত্য সম্পর্কে মকর রাশির প্রভাব থাকে। এরা সাধারণত ভবিষ্যতকে কীভাবে আরও সুন্দর করে গড়ে তোলা যায়, সেই বিষয়ে চিন্তা করেন। ভবিষ্যতের কথা বেশি ভাবতে গিয়ে বর্তমানকে অনেক সময় অবহেলা করেন ডিসেম্বর মাসের বিবাহিতরা। পরস্পরের প্রতি প্রেমের আকর্ষণের থেকে বৈষয়িক দেওয়া নেওয়ার দিকেই এদের বেশি নজর থাকে।
ডিসেম্বর মাসের বিবাহিতরা দাম্পত্য সম্পর্ককে প্রেমের সম্পর্ক থেকে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সম্পর্ক বলেই বেশি মনে করেন। এদের বিবাহিত জীবন টাকা-পয়সা, পরিবার পরিকল্পনা ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই কেটে যায়। অনেক সময় ডিভোর্সও দেখা যায় এদের মধ্যে।