5.6 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

হ্যালোয়িন রহস্যময়: ভূত প্রেতের আনাগোনা

হ্যালোয়িন রহস্যময়: ভূত প্রেতের আনাগোনা

হ্যালোয়িন, নর্থ আমেরিকার জীবন যাপনের প্রথম বছর হঠাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে দোকান গুলো ভূত, কঙ্কাল, আর নানারকম ভৌতিক সরঞ্জামে সেজে উঠতে দেখে ভীষণ অবাক হয়ে যাই। কাটা হাত পা, ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ,রক্তমাখা শরীর ভয়ানক সব মুখোস থরে থরে সাজানো। দোকানে সাজিয়ে রাখা ভৌতিক বস্তু কখন কোনটা আবার হঠাৎ হঠাৎ কথা বলে উঠে, ভয়ঙ্কর শব্দে পিলে কাঁপিয়ে দেয়। অথবা চোখ ঘুরিয়ে তাকায়,লাফিয়ে উঠে বা হিঁ হিঁ হিঁ হেসে উঠে পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে। যদিও জানি সবই তৈরী সরঞ্জাম তবু গা শিরশির করে ওঠে ভয়ে।

- Advertisement -

দোকান না মনে হয় যেন হন্টেড হাউসে ঢুকে পরেছি। এসব দিয়ে শুরু হয় বাড়ি সাজানো। নিজেস্ব সামর্থের মধ্যে সবাই সাজায় বাড়ি হ্যালোয়িনের উৎসবের জন্য। অক্টোবরের একত্রিশ প্রতিবছর পালিত হয় হ্যালোয়িনের উৎসব।অশুভ আত্মা যাতে ক্ষতি করতে না পারে মানুষের। এজন্য শীত শুরুর ঠিক আগে প্রেতদের ভোজ, পূজা সব দেয়া হয়। হ্যালোয়িনের ক’দিন আগে থেকে বাড়ি গুলো সাজানো হয় প্রেতপুরীর মতন। ভুত,প্রেত, রক্ত, পুরানো মাকড়শার জাল, মাকড়শা, কঙ্কাল, চামচিকা, জ্যাকলন্ঠন, পামকিন, ভৌতিক শব্দ ইত্যাদি দিয়ে সাধ্যমতন যথা সম্ভব ভীতিকর করে সবাই বাড়িগুলো সাজায়। হ্যালোয়িনের রঙ কমলা কালো। ‘‘ট্রিক ওর ট্রিট’’ হ্যালোয়িনের প্রচলিত শব্দ। এদিন সন্ধ্যায় বাচ্চারা নানারকম ভূত প্রেত সেজে বাড়ি বাড়ি যায়। হাঁক দেয় ’ট্রিক ওর ট্রিট’ দরজা খোলাই থাকে বাড়িগুলোর, নানা রকম চকোলেট দিয়ে ভরে দেয়া হয় বাচ্চাদের হাতের ব্যাগ। বাড়ি বাড়ি ঘুরে বোঝাই চকোলেট ব্যাগ বয়ে খুশি মনে বাচ্চারা বাড়ি ফেরে।

প্রথম যারা জাহাজে ভাসতে ভাসতে এসে ক্যানাডায় জীবনযাত্রা শুরু করে। ইংলেন্ড থেকে বিতারিত পাইরেটস শ্রেণীর লোকরাই তার মধ্যে বেশী। সে সময় প্রচণ্ড শীতে যখন প্রচুর মানুষ মারা যেত। এত বেশী মৃত্যুকে প্রচীনকালের মানুষরা অশুভ ভৌতিক কারণ হিসাবে ভাবত আর ভুত-পিশাচদের তুষ্ট করার জন্য, রোমান সেল্টিক কাল্চারের অনুসরনে আত্মার শান্তিদিনের প্রার্থণা শুরু হয় এই দিনে।বাড়ির বাইরে খাবার দিয়ে রাখা হতো অশুভ আত্মাদের খুশি করতে । শীতকালে শীতের প্রকোপ থেকে যেন বাঁচে, সুস্থ সবল থাকে সবই, মানুষ এবং পশু সম্পদ।

পিশাচরা টেনে না নেয় মৃত্যুর কোলে তার জন্য শীতের আগে শুরু হয় র্প্রাথণা। আগুনের প্রতিক হিসাবে পামকিন আর ভয় অশুভ, অন্ধকারের প্রতিক ধারন করে কালো রঙ। পৌরানিক সেই ধারার প্রচলন আজ চকোলেটের ট্রিটে এসে ঠেকেছে।বাচ্চারা সাজে নানান রকম ভৌতিক সাজে সাথে বড়রাও। আজকাল অনেকে মুভি চরিত্র বা প্রিয় কোন চরিত্র বেছে নেয় হ্যালোয়িনের সাজ হিসাবে। সময়টাকে আনন্দময় করাই মূল উদ্দেশ্য।নানান রকম মানুষের বাস এখন উত্তর আমেরিকা জুড়ে। জীবন যাপন তাই সব সময় নিরাপদ নয়।

শিশুরা যেন নিরাপদ থাকে হ্যালোয়িনের সন্ধ্যায় তার জন্য সতর্ক ব্যবস্থা নেয়, শহরের পুলিশ বিভাগ আর নিরাপদ ভাবে চলার নির্দেশনা দিতে থাকে রেডিও টেলিভিশন আগের ক’দিন থেকে। বাচ্চাদের সাথে অভিভাবকও হাঁটে বাড়ি বাড়ি।দেশে যেমন পুজায় অংশ নেয়ার জন্য ব্যাস্ত থাকতাম এখানে তেমনি জীবনের সংস্কৃতিতে সংযোজিত হয়েছে অবাক হয়ে দেখা হ্যালোয়িন দিবস।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles