
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে রদবদল সংক্রান্ত ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। গতকাল রবিবার রাতে ‘জান্নাতুল ফেরদৌস স্নিগ্ধা’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে অডিওটি প্রকাশের পর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।
অডিওর থাম্বনেইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তন্ময় সাহা টনির ছবি ব্যবহার করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘অভিনন্দন আমাগো দাদু ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, হায়রে দল, হায়রে রাজনীতি, নেতা হতে গিয়ে নিজ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে দাদু। তোমার তো সংগঠন থেকে বহিষ্কার শুধু না ফাঁসি হওয়া উচিৎ।’
অভিযোগ উঠেছে, অডিওতে থাকা একজনের কণ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তন্ময় সাহা টনির। তবে তিনি দাবি করেছেন, ফাঁস হওয়া অডিওর সঙ্গে তার কণ্ঠের ন্যূনতম কোনো মিল নেই।
ওই অডিওতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি বরিকুল ইসলাম বাধনের নাম শোনা যায়। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে রদবদলের চেষ্টা করার কথা বলতে শোনা যায়।
অডিওটির একটি অংশে বলতে শোনা যায়, ‘এখন যেহেতু ভাইস চ্যান্সেলর নাই, বাধন ভাইয়ের (কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি) সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বললেন, যদি কপালে ঠিকঠাক থাকে তাহলে ভারপ্রাপ্ত (শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) করে দিবনে। ওর (বর্তমান সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত) নামে যে এলিগেশন আছে কয়টা নিউজ করায়া, ওটা নিয়ে একটা ইস্যু করায়া, ওরে সরায়া আপনাকে (টনিকে) দায়িত্ব দিয়ে দিবনে।’
ফাঁস হওয়া অডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তন্ময় সাহা টনি বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিওর সঙ্গে আমার ভয়েসের ন্যূনতম কোনো মিল নেই। কেউ আমাকে বিতর্কিত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব ছড়াচ্ছে। আমি রাজনৈতিক জীবনে এমন কোনো কাজ করিনি, যে কারণে আমার ব্যক্তিগত ও সংগঠনের ইমেজ নষ্ট হবে।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি বরিকুল ইসলাম বাধন বলেন, ‘আমার দায়িত্ব পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ওর (তন্ময় সাহা টনি) সঙ্গে কোনো প্রকার কথা হয়নি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে আমি মাথা ঘামাই না। কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে কোনো কথা বলে থাকে এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। ওকে আমাদের কোনো প্রকার হেল্প করার সুযোগ নাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিওটা শুনেছি। আমরা ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গে এ ব্যাপারে মোবাইলে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ও যাচাই-বাছাই করবে। যদি সত্যিই কণ্ঠসাদৃশ্য অডিও তন্ময় সাহা টনির হয় তাহলে কেন্দ্র সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।’
এর আগে গত বুধবার রাতে সানজিদা আক্তার তানিয়া নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত দুটি অডিও ফেসবুকে ফাঁস হয়। একটি ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এবং ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের। অডিও দুটিতে ড্রাইভার নিয়োগের দেড় মাসেও চুক্তি হওয়া ২০ লাখ টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ এবং এক চাকরিপ্রার্থীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করতে শোনা যায়।
তবে অডিও দুটি সুপার এডিটেড বলে দাবি করে এ ঘটনায় ইবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুন্সি কামরুল হাসান।