
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন কে এম শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আমাকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে টার্গেট করতে গিয়ে বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে মারবেন না। সিঙ্গেল টার্গেট করে গুলি করে হত্যা কইরেন।’ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় আমাকে টার্গেট করতে পারে। কারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে, কোথায় কোথায় কন্ট্রাক্ট করা হচ্ছে– সবই জানি। ট্রাই করছেন, করে যান। ১৬ জুন এত বড় বোমা হামলায় মরি নাই, আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। তবে যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করছেন তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমাকে মারতে চান মারেন। তবে কাপুরুষের মতো বোমা মেরে হত্যা কইরেন না। আমাকে টার্গেট করতে গিয়ে নিরীহ মানুষকে মারবেন না। আমাকে মারতে চান সিঙ্গেল টার্গেট করে গুলি করে হত্যা কইরেন।’
সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বক্তব্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে তিনি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে ইঙ্গিত করে নানা অভিযোগ করেন।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের নামে মনোনয়নপত্র কেনা হয়েছে। যদিও গিয়াস উদ্দিন এটিকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা প্রমুখ। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য শামীম ওসমান এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন বলে জানান।
শামীম ওসমান এ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে ইঙ্গিত করে বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাঁর নির্বাচনী এলাকার ১২ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এখনও বিচার পায়নি।
গিয়াস উদ্দিনকে বড় পল্টিবাজ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, একবার আওয়ামী লীগ, একবার জাতীয় পার্টি, আবার আওয়ামী লীগ, আবার বিএনপি– এসব পল্টিবাজ নেতাকে কেউ নিতে চায় না। এখন বিভিন্ন দরজায় নক করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এখন আবার নানা নাটক করছেন।
শামীম ওসমান বলেন, ‘কে মনোনয়ন ফরম নিয়েছে কে নেয়নি সেটা আমার সাবজেক্ট ম্যাটার নয়। মনোনয়ন ফরম জমা না হওয়া পর্যন্ত সেটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। তিনি এটা নিয়ে স্ট্যান্টবাজি করছেন।’
গত ২৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও তাঁর ছেলের পক্ষে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র কেনা হয়। যদিও মৌখিকভাবে ও পরে নির্বাচন অফিসে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে গিয়াস উদ্দিন এ মনোয়নপত্র কেনার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
তবে তাঁর এ মনোনয়নপত্র কেনা ও পরে নির্বাচন অফিসে চিঠি দিয়ে অস্বীকার করা প্রসঙ্গে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, সরকারি ট্রেজারিতে মনোনয়নপত্রের টাকা জমা হয়েছে। মনোনয়পত্র নেওয়ার জন্য যে নিয়ম তা পূরণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। পরে গিয়াস উদ্দিন সাহেব মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি অস্বীকার করে লিখিত দিয়েছেন। এই লিখিত বক্তব্যের নিচে যে স্বাক্ষর রয়েছে সে স্বাক্ষর যে গিয়াস উদ্দিন সাহেবের এটা আমরা কীভাবে নিশ্চিত হবো? তিনি নির্বাচন অফিসে উপস্থিত হয়ে আপত্তি জানালে এটি নিশ্চিত হওয়া যেত।
এ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘দেশে কি কোনো বিএনপি নেতা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার অবস্থায় আছে? আমরা তো পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। পুলিশ আমাদের খোঁজ পেলেই তো গ্রেপ্তার করে। আমরা নির্বাচন অফিসে যাব কীভাবে?’