
স্বাস্থ্য উইং পরিকল্পণা কমিশনে স্বাস্থ্য খাতে যে প্রকল্পগুলি নেয়া হতো তার প্রতিটির প্রকল্প পত্র জমা দেয়া হতো। একেবারে বটম লেবেলে সেটা যাচাই বাছাই করা হতো এবং আমরাই তা করতাম। এর পর প্রকল্প সারপত্র তৈরী করা হতো। সারপত্রটি তৈরী হলে প্রকল্পটির অনুমোদনের জন্য সভা ডাকা হতো যাতে জড়িত হতো প্রায় প্রতিটি মন্ত্রনালয়। সকল মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর এটি অনুমোদনের জন্য পেশ করা হতো। অধিক প্রাক্কলিত মূল্যের প্রকল্পগুলি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় পেশ করা হতো। এমন একটি একনেক সভায় ১৯৯৬ সালে একবার উপস্থিত ছিলাম।
মোটামুটি কাজ শিখে ফেলেছি। বেশী সমস্যা হতো ষ্টেনো টাইপিষ্টকে নিয়ে তাকে কোন কাজ দিলে টাইপ মেশিনে আধা টাইপ করে রেখে উধাও হয়ে যেত। বেশীর ভাগ সময় দুপুরের নামাজের কথা বলে যেত আর ফিরে আসতো না। এমন অবস্থায় কিছু করার থাকতো না। সে সময় কম্পিউটার আসতে শুরু করেছে অফিসে তাতে বিজয় বাংলাও দেয়া হয়েছে। এবার একা একা কাট পেষ্ট করা শুরু করলাম। কাছুদিনের মধ্যে বাংলা টাইপ করা শিখে গেলাম।
আমার এই অফিসে ডাক্তারী বিদ্যার কোন দাম নেই তবে দাম আছে মেডিকেল terminology এর। আমি ভেবেছিলাম এখানে আমিই এসেছি আর কেউ আসবেনা কিন্তু আমার সে ধারনা ভুল ছিল। বেশ কিছু দিন পর যুগ্ম-প্রধান পরিচিত একজন ডাক্তারের কথা বললেন যার সাথে আমার পরিচয় কিছুদিনের। স্যার বললেন সে তার দেশের। একদিন সকালে স্যার ডাকলেন
-আযম সাহেব
-জী স্যার,
-কোথায় যাবেন বলেন।
-বললেই কি যাওয়া যায়?
-আমি বললেই যাবে।
বুঝতে পারলাম কলকাঠি কে নাড়ছে। ভাবলাম আমার অপরাধ কি। আমি মন দিয়ে সংসার ধর্ম দূরে রেখে কাজ করে যাচ্ছি।
-কোথায় যাবো স্যার?
কথার সুর পাল্টালাম। অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি তাই কৌশলী হলাম কারন যুগ্ম-প্রধানের কাছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালকেরা বাধা কাজেই স্যার যা বলবেন তারা তাই শুনবেন।
এ যাত্রা স্যারকে বুঝিয়ে ঠান্ডা করলাম। নিরাপদ মনে হলো পরিস্থিতিকে।