9.6 C
Toronto
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

মাস্টার্স পাস করে ইয়াবা কারবারি হয়েছেন রত্না

মাস্টার্স পাস করে ইয়াবা কারবারি হয়েছেন রত্না
রত্না আক্তার

উচ্চশিক্ষিত হয়ে ভালো চাকরি বা ব্যবসা করার পরিকল্পনা থাকে বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীর। কেউ আবার উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে রত্না আক্তার সে পথে হাঁটেননি। তিনি সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করার পর জড়িয়ে পড়েন ইয়াবার কারবারে। তাঁর ভাই-ভাবিও এ কারবারে জড়িত। ফলে ইয়াবার জোগান পেতে সমস্যা হয়নি। দ্রুত তিনি হয়ে ওঠেন পাইকারি বিক্রেতা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি গোপনে চালিয়ে আসছিলেন এ কারবার। তবে শেষরক্ষা হয়নি, তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ের মিরপুর সার্কেলের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁঞা সমকালকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি গাজীপুর সদরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাথোরা এলাকার বাড়ি থেকে রত্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৩ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মাদক বিক্রির ১ লাখ ৫ হাজার ৩০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন।

- Advertisement -

এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানায় মামলা হয়েছে।

ডিএনসি সূত্র জানায়, রত্নার ভাই মো. শিপন আগে থেকেই মাদক কারবারে যুক্ত। বর্তমানে তিনি একটি মামলায় কারাবন্দি। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মোছা. রোজী এখন স্বামীর কারবার সামলাচ্ছেন। মূলত তিনিই ননদকে ইয়াবার চালান এনে দেন। আর রত্না সেগুলো বিক্রি করেন।
বিপণনের সুবিধার্থে তিনি ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে একটি করে প্যাকেট বানাতেন। সেগুলো পাইকারি বিক্রির জন্য। খুচরা বিক্রেতারা এমন এক বা একাধিক প্যাকেট কিনে দুই-চার পিস করে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করেন। আর কিছু ক্ষেত্রে রত্না নিজেও খুচরা বিক্রি করতেন।

অভিযান-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সাধারণ আয়ের পরিবারের সদস্য রত্না। তিনি গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেন। এরপর বছরখানেক আগে তিনি জড়ান মাদক কারবারে। মাদক বিক্রি করেই তিনি দ্রুত পরিবারের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। তাঁর বাবা বোতাম তৈরির কারখানায় কাজ করেন, মা গৃহিণী। অথচ তাদের নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলোয় রয়েছে দামি আসবাব। রত্নার মা-বাবাও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইয়াবা কারবারে সহায়তা করেন।

অভিযানের সময় ডিএনসি দলকে দেখে রত্নার মা প্রথমেই এক সেট চাবি লুকানোর চেষ্টা চালান। সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সদুত্তর দেননি। পরে তিনি দাবি করেন, পুত্রবধূ রোজী ইয়াবার কারবার করেন, তিনি বাড়িতে নেই। এ সময় একটি ঘর বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। কর্মকর্তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ওই ঘরেই থাকেন তাঁর পুত্রবধূ। সেই তালার চাবিই তাঁর হাতে। কর্মকর্তারা তালা খুলে ভেতরে ঢুকতে চাইলে তিনি বাধা দেন এবং ঘরে কেউ নেই বলে জানান। তারপরও অভিযানকারী দলের সদস্যরা জোর করে তালা খোলেন। তখন ঘরের ভেতর রত্নাকে পাওয়া যায়। এএসআই

কাজল রেখার সহায়তায় তাঁর শরীর ও ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পাওয়া যায়।

তবে প্রতিবেশী বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউই রত্নাকে মাদক কারবারি হিসেবে জানেন না।
তারা বলছেন, রত্নাকে ‘ভালো মেয়ে’ হিসেবেই জানেন। তিনি পড়ালেখা শেষ করে সংসার করছেন। তাঁর স্বামী মো. জামানের ছোট্ট মুদি দোকান রয়েছে। তাঁর এই অধঃপতন দেখে তারা বিস্মিত হন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles